রবিবার, ০৮ জুন ২০২৫, ০১:২৩ পূর্বাহ্ন

বর্বর ইসরায়েলি হামলায় ঈদের দিনও রক্তাক্ত গাজা, নিহত ৪২

আন্তর্জাতিক ডেস্ক। মেট্রোটাইমসটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট : শনিবার, ৭ জুন, ২০২৫, ২:৩৭ অপরাহ্ন

পবিত্র ঈদুল আজহার দিনেও  বর্বর ইসরায়েলি হামলায়  রক্তাক্ত হয়েছে গাজাবাসি।

শুক্রবার (৬ জানুয়ারি) ঈদের দিন  সকালে শুরু হয়ে রাত পর্যন্ত একের পর এক বিমান হামলায় কেঁপে উঠেছে গাজার আকাশ।

এই হামলায় অন্তত ৪২ জন ফিলিস্তিনি প্রাণ হারিয়েছেন বলে নিশ্চিত করেছে গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। নিহতদের মধ্যে একজন সাংবাদিকও রয়েছেডি

গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, দিনভর চলা এই হামলায় সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে দক্ষিণ গাজার খান ইউনিস, উত্তর গাজার আল শিফা এলাকা, মধ্যাঞ্চলের গাজা সিটি ও দেইর আল বালাহ। নিহতদের মরদেহ পৌঁছেছে নাসের হাসপাতাল, আল শিফা হাসপাতাল, আল আহলি ব্যাপ্টিস্ট হাসপাতাল এবং আল আকসা শহর হাসপাতালসহ চারটি স্বাস্থ্যকেন্দ্রে।

তবে শুধু এই ৪২ জনই নয়, ধ্বংসস্তূপের নিচে আরও মরদেহ আটকে থাকার আশঙ্কা করা হচ্ছে। উদ্ধারকাজ এখনো চলছে।

গাজার দেইর আল বালাহ থেকে আলজাজিরার স্থানীয় প্রতিনিধি তারেক আবু আজুম বলেন, বিশ্বের মুসলিমরা যেখানে ঈদ উদযাপন করছে, সেখানে গাজার শিশুদের ঈদ শুরু হয় ধ্বংসস্তূপের কান্না দিয়ে। প্রতি ঈদেই আমরা এখানে শুধু শোক দেখতে পাই।

মর্মান্তিক এই হামলায় প্রাণ হারানো সাংবাদিকের মৃত্যুর মধ্য দিয়ে গত দেড় বছরে গাজায় নিহত সাংবাদিকের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২২৬ জনে, জানিয়েছে গাজার মিডিয়া অফিস।

প্রসঙ্গত, ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর ইসরায়েলের ভেতরে হামাসের অতর্কিত আক্রমণের পর থেকেই গাজায় দফায় দফায় সামরিক অভিযান চালিয়ে আসছে ইসরায়েল। সেই হামলায় ১ হাজার ২০০ ইসরায়েলি নিহত ও ২৫১ জনকে জিম্মি করা হয়েছিল। তার প্রতিক্রিয়ায় শুরু হওয়া অভিযানে গত ১৭ মাসে গাজায় প্রাণ গেছে প্রায় ৫৪ হাজার ৬৭৭ জন ফিলিস্তিনির, আহত হয়েছেন আরও ১ লাখ ২৫ হাজার ৫৩০ জন। এদের মধ্যে ৫৬ শতাংশই নারী ও শিশু।

এছাড়া গত মার্চ থেকে গাজায় ত্রাণবাহী যান প্রবেশেও নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে ইসরায়েল, যার ফলে ভয়াবহ মানবিক সংকটে পড়েছে প্রায় ২৩ লাখ গাজাবাসী। খাদ্য, পানি, ওষুধের তীব্র অভাবে এক প্রকার মৃত্যুর মুখেই দিন কাটাচ্ছে তারা।

অন্যদিকে, হামাসের হাতে থাকা ২৫১ জন জিম্মির মধ্যে এখনও অন্তত ৩৫ জন জীবিত বলে ধারণা করা হচ্ছে। তাদের উদ্ধারে সামরিক অভিযান অব্যাহত রাখার ঘোষণা দিয়েছে ইসরায়েলি ডিফেন্স ফোর্স (আইডিএফ)।

যুদ্ধবিরতির দাবিতে আন্তর্জাতিক চাপ দিন দিন বাড়লেও, ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন—হামাসকে সম্পূর্ণভাবে নিঃশেষ না করা পর্যন্ত এই অভিযান চলবে।

জাতিসংঘের অনুরোধ ও ইন্টারন্যাশনাল কোর্ট অব জাস্টিসে (আইসিজে) গণহত্যার অভিযোগ দায়েরও ইসরায়েলি অবস্থান বদলাতে পারেনি।

সম্প্রতি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র দুই মাসব্যাপী একটি যুদ্ধবিরতির প্রস্তাবনা দিয়েছে। যদিও নেতানিয়াহু এতে সম্মতি দিয়েছেন, তবে হামাস এখনো আনুষ্ঠানিকভাবে সেই প্রস্তাবে সায় দেয়নি।

গাজার আকাশে ধোঁয়া, জমিনে রক্ত—এই নিয়তিকে নিয়েই যেন ঈদ পালন করতে বাধ্য হচ্ছে ফিলিস্তিনিরা। এই উৎসবের দিনেও, মৃত্যু তাদের পিছু ছাড়ছে না।


এই ক্যাটাগরির আরও সংবাদ
এক ক্লিকে বিভাগের খবর