কুষ্টিয়া শহর থেকে শিক্ষার্থী নিয়ে ক্যাম্পাসে যাওয়ার পথে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে রাস্তার পাশে উল্টে গেছে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় (ইবি) ভাড়ায় চালিত একটি বাস।
আজ মঙ্গলবার (২৫ ফেব্রুয়ারি) সকাল সাড়ে ১০টার দিকে কুষ্টিয়ার বিত্তিপাড়া নামক স্থানে রাস্তার ডান দিকে উল্টে যায় বাসটি। এ সময় বাসে আনুমানিক ৪০ জন শিক্ষার্থী ছিলেন বলে জানা যায়। দুর্ঘটনায় ২০ জন শিক্ষার্থী আহত হয়েছেন। তার মধ্যে ১২ জন ইবি মেডিক্যালে এবং বাকি ৮ জন কুষ্টিয়া সদর হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন।
প্রত্যক্ষদর্শীরা বলেন, কুষ্টিয়া থেকে সকাল ১০ টায় বাসটি ক্যাম্পাসের উদ্দেশ্যে ছেড়ে আসে। বাসটি দ্রুত গতিতে চলছিল। এসময় সামনে থাকা পরিবহনকে ওভারটেক করতে গিয়ে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে বাসটি সড়ক থেকে ছিটকে রাস্তার নিচে পড়ে যায়।
শিক্ষার্থীরা জানান, বাসে ৩৫ থেকে ৪০ জন শিক্ষার্থী ছিল এবং বেশিরভাগই ঘুমাচ্ছিলেন। ক্যাম্পাসে আসার সময় চালকও ঘুম ঘুম ভাব নিয়ে বাসটি চালাচ্ছিলেন। বাসটি বিত্তিপাড়ার দুর্ঘটনাস্থলে পৌঁছালে হঠাৎ করেই বাসের একজন ‘মামা’ বলে চিৎকার করে ওঠেন। তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় শিক্ষার্থীরা দেখতে পান বাসটি রাস্তার বাঁ দিকে থেকে ডান দিকে গিয়ে গড়িয়ে ধান ক্ষেতের মধ্যে উল্টে যাচ্ছে। তবে বাসের গতি তুলনামূলক কম হওয়ায় বড় ধরনের ক্ষয়ক্ষতি হয়নি।
দুর্ঘটনার খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রো-ভিসি ও পরিবহন প্রশাসক অধ্যাপক ড. এম এয়াকুব আলী এবং প্রক্টর অধ্যাপক ড. শাহীনুজ্জামান। পরে আহত শিক্ষার্থীদের দেখতে ও শারীরিক খোঁজখবর নিতে মেডিক্যালে আসেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. নকীব মোহাম্মদ নসরুল্লাহ এবং ছাত্র উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. ওবায়দুল ইসলাম। এ সময় তারা আহত শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলে তাদের খোঁজখবর নেন এবং দায়িত্বরত চিকিৎসকদের যথাযথ চিকিৎসা দেওয়ার নির্দেশনা দেন।
ইবি মেডিকেলের দায়িত্বরত চিকিৎসক ডা. আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, ‘দুর্ঘটনার খবর পেয়ে আমরা মেডিক্যাল টিম নিয়ে ঘটনাস্থলে গিয়েছিলাম। সেখান থেকে ১২ শিক্ষার্থীকে মেডিক্যাল সেন্টারে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। তাদের মধ্যে তিন জনের অবস্থা ছিল একটু গুরুতর। একজনের মাথায় আঘাত, আরেকজনের কানে আঘাত এবং দুজনের পায়ের আঘাত ছিল। আমরা এখানে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে এক্স-রে সাজেশন দিয়ে কুষ্টিয়া সদর হাসপাতালে পাঠিয়েছি। পরবর্তীতে আরও কোন চিকিৎসা দেওয়ার প্রয়োজন হলে আমরা দেবো।’
বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য ও পরিবহন প্রশাসক অধ্যাপক ড. এম. এয়াকুব আলী বলেন, ‘দুর্ঘটনার খবর পাওয়ামাত্রই আমি এবং প্রক্টর মহোদয় ঘটনাস্থলে এসেছি এবং এখানেই রয়েছি। রেকার দিয়ে বাসটি তোলা হয়েছে। আল্লাহর রহমতে কেউ নিহত হয়নি। তবে সবাই কমবেশি আহত হয়েছে। আহতদের উন্নত চিকিৎসা চলছে।’
তবে ঘটনার পর থেকে বাসটির চালক ও হেলপার পলাতক আছেন।