রাজশাহীর পুঠিয়া উপজেলায় চাঁদা না পেয়ে দুই সেনাসদস্যের বাড়িতে হামলা ও অগ্নিসংযোগের ঘটনায় দুই বিএনপিকর্মীকে গ্রেপ্তার করেছে সেনাবাহিনী।
বুধবার (১১ জুন) রাত ৩টার দিকে রাজশাহী সেনানিবাসের লেফটেন্যান্ট মোহাম্মদ তারেক আজিজের নেতৃত্বে সেনাবাহিনীর একটি দল অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করে।
সেনাবাহিনীর হাতে গ্রেপ্তার দুজন হলেন পুঠিয়ার ভাড়রা গ্রামের মো. আমসুলের ছেলে মো. সুজন (৩২) ও হাতিনাদা গ্রামের মৃত সায়েমের ছেলে শাহিন আক্তার ওরফে খোকন (৪১)। তারা বিএনপির কর্মী। তাদের পুঠিয়া থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।
সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে গ্রেপ্তার দুজনকে ভোরে পুঠিয়া থানায় হস্তান্তর করা হয়। পরে তাদের বিরুদ্ধে করা মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গত সোমবার দুপুরে পুঠিয়ার হাতিনাদা গ্রামে সেনাসদস্য তরিকুল ইসলাম ও মো. আল-আমিনের বাড়িতে হামলার ঘটনা ঘটে। তারা দুজন সম্পর্কে চাচাতো ভাই। অভিযুক্তরা বাড়িতে ভাঙচুর, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগ করেন বলে অভিযোগ রয়েছে।
তরিকুল ইসলামের বাবা আবদুল হান্নান স্থানীয়ভাবে আওয়ামী লীগপন্থি হিসেবে পরিচিত। তার দাবি, স্থানীয় ইউপি সদস্য ও বিএনপি নেতা রফিকুল ইসলাম তার কাছে পাঁচ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেন। চাঁদা না দেওয়ায় ক্ষিপ্ত হয়ে সোমবার হামলা চালায়।
অন্যদিকে এদিন দুপুরে এলাকার একটি চায়ের দোকানে আবদুল হান্নানের ছেলে মো. তুষার তার মামাতো ভাইয়ের সঙ্গে হাসাহাসি করছিলেন। এ সময় বিএনপি নেতা রফিকুল ইসলাম বিষয়টি নিজের প্রতি কটাক্ষ হিসেবে ধরে নিয়ে তুষারকে মারধর করেন। পরে তার বাড়িতে হামলা চালানো হয়। এ সময় বাড়ির সদস্যরা প্রাণভয়ে পালিয়ে যান। একই সময় সেনাসদস্য আল-আমিনের বাড়ির জানালার কাচ ভাঙচুর করা হয়। ঘটনার পর আবদুল হান্নান পুঠিয়া থানায় মামলা করেন।
এদিকে, হামলার ঘটনায় বুধবার রাজশাহী জেলা বিএনপি জরুরি সভায় উপজেলা বিএনপির সদস্য ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান আনোয়ারুল ইসলাম জুম্মা এবং বানেশ্বর ইউনিয়নের বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক ও ইউপি সদস্য রফিকুল ইসলামকে দল থেকে আজীবন বহিষ্কার করে।
পুঠিয়া থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) দুলাল হোসেন বলেন, ‘গ্রেপ্তার দুজনকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। মামলার প্রধান আসামি রফিকুল ইসলামসহ অন্যদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।’