মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কের জন এফ কেনেডি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সফরসঙ্গী জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) সদস্য সচিব আখতার হোসেনকে ডিম নিক্ষেপ করেছেন কার্যক্রম নিষিদ্ধ সংগঠন আওয়ামী লীগের যুক্তরাষ্ট্র শাখার নেতাকর্মীরা।
এ ঘটনায় অবিলম্বে দৃঢ় পদক্ষেপ নিতে তিন দফা দাবির কথা জানিয়েছে এনসিপি।
আজ মঙ্গলবার (২৩ সেপ্টেম্বর) গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে এনসিপির প্রবাসী উইং ডায়াস্পোরা অ্যালায়েন্স এসব দাবি জানিয়েছে।
বিবৃতিতে বলা হয়, ‘আমরা উদ্বেগ ও ক্ষোভের সঙ্গে জানাচ্ছি যে সরকারি আমন্ত্রণে ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্র সফরে অংশগ্রহণকারী এনসিপির নেতা আখতার হোসেন ও তাসনিম জারার ওপর বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সমর্থক সন্ত্রাসীরা ন্যক্কারজনক হামলা চালিয়েছে। এ ঘটনা শুধু রাজনৈতিক সহিংসতার বহিঃপ্রকাশ নয়, বরং রাষ্ট্রের কূটনৈতিক মর্যাদা ও নিরাপত্তাব্যবস্থার চরম ব্যর্থতার উদাহরণ।’
দলটির পক্ষ থেকে প্রশ্ন রেখে বলা হয়, ‘সরকারি সফরের অংশগ্রহণকারীরা যদি ন্যূনতম নিরাপত্তা না পান, তবে বিদেশে অবস্থানরত বাংলাদেশি কনস্যুলেট ও দূতাবাসগুলোর অস্তিত্বের যৌক্তিকতা কোথায়? তারা কাদের স্বার্থে কাজ করছে, আর কেন এ ধরনের অপরাধীদের বিরুদ্ধে কার্যকর ব্যবস্থা নিচ্ছে না?’
বাংলাদেশ সরকার ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় রাষ্ট্রীয় সফররত ব্যক্তিদের নিরাপত্তা নিশ্চিতে সম্পূর্ণ ব্যর্থ উল্লেখ করে এ বিষয়ে দ্রুত দৃঢ় পদক্ষেপ নিতে তিন দফা দাবি উত্থাপন করা হয় বিবৃতিতে। দাবিগুলো হলো౼
১. বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে সরাসরি যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল সরকার এবং নিউইয়র্ক শহরের সরকার ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কাছে সরাসরি অভিযোগ করতে হবে।
২. নিউইয়র্কের বাংলাদেশ কনস্যুলেট জেনারেলসহ সম্পূর্ণ ফরেন সার্ভিস টিমকে অবিলম্বে চাকরিচ্যুত করতে হবে।
৩. সফরের পরবর্তী অংশের জন্য প্রত্যেক সফররত নেতাদের সর্বোচ্চ নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, ‘হামলার সময় এনসিপির সদস্য সচিব আখতার হোসেন ও তাসনিম জারার সঙ্গে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ অন্য সফরসঙ্গীরাও ছিলেন এবং তারাও আওয়ামী সন্ত্রাসীদের তোপের মুখে পড়েন। কিন্তু এই হামলার প্রধান লক্ষ্যবস্তু করা হয়েছে মূলত এনসিপির দুই নেতাকে। জুলাই বিপ্লবের সময় যারা জীবনবাজি রেখে লড়েছিলেন, তাদের প্রতি প্রতিশোধপরায়ণ হামলাকারীদের ক্ষোভ আজও থামেনি।’
‘আখতার হোসেনকে জুলাই আন্দোলনের সময় গ্রেপ্তার করে নির্যাতন চালানো হয়। তিনি গণ-আন্দোলনের জন্য নিজের জীবন ঝুঁকিতে ফেলেছিলেন। অথচ আজও সেই সংগ্রামের মূল্য দিতে হচ্ছে। এটি অন্তর্বর্তী সরকারের চরম ব্যর্থতা।’
বিবৃতিতে সবশেষে বলা হয়, ‘বিদেশের মাটিতে আওয়ামী লীগের এ ধরনের সন্ত্রাসী হামলা শুধু প্রবাসী বাংলাদেশিদের নিরাপত্তার জন্য নয়, বরং বাংলাদেশের মর্যাদা ও গণতান্ত্রিক ভবিষ্যতের জন্যও হুমকিস্বরূপ। আমরা এর তীব্র নিন্দা জানাই এবং অবিলম্বে কার্যকর পদক্ষেপ দাবি করছি।’
এদিকে নিউইয়র্কে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) সদস্য সচিব আখতার হোসেনসহ অন্য রাজনৈতিক নেতাকর্মীদের ওপর হামলার ঘটনা পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের গাফিলতি আছে বলেও মন্তব্য করেছেন দলটির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম।