সন্ত্রাসবিরোধী আইনে শাহবাগ থানায় করা মামলায় ঢাকার সিএমএম আদালতের পর এবার মহানগর দায়রা জজ আদালতেও আওয়ামী লীগের বহিষ্কৃত নেতা ও সাবেক মন্ত্রী আব্দুল লতিফ সিদ্দিকীর জামিনের আবেদন নামঞ্জুর হয়েছে।
আজ রোববার (৫ অক্টোবর) শুনানি শেষে ঢাকার পঞ্চম অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ ফারজানা ইয়াসমিনের আদালত এ আদেশ দেন।
আসামিপক্ষের আইনজীবী তাহমিনা তাহেরিন মুন শুনানিতে জামিনের আবেদন করেন।
তবে রাষ্ট্রপক্ষ থেকে এ আবেদনের বিরোধিতা করা হয়। উভয় পক্ষের বক্তব্য শোনার পর আদালত জামিন আবেদন নামঞ্জুর করেন। সংশ্লিষ্ট রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী রফিকুল ইসলাম খান বিষয়টি গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেছেন।
এর আগে গত ২৯ আগস্ট একই মামলায় সাবেক মন্ত্রী আব্দুল লতিফ সিদ্দিকী, হাফিজুর রহমান (কার্জন) ও মো. আব্দুল্লাহ আল আমিনসহ মোট ১৬ জনকে কারাগারে পাঠানো হয়।
মামলার অন্য আসামিরা হলেন সাংবাদিক মঞ্জুরুল আলম পান্না, কাজী এ টি এম আনিসুর রহমান বুলবুল, গোলাম মোস্তফা, মো. মহিউল ইসলাম ওরফে বাবু, মো. জাকির হোসেন, মো. তৌছিফুল বারী খান, মো. আমির হোসেন সুমন, মো. আল আমিন, মো. নাজমুল আহসান, সৈয়দ শাহেদ হাসান, মো. শফিকুল ইসলাম দেলোয়ার, দেওয়ান মোহাম্মদ আলী এবং মো. আব্দুল্লাহীল কাইয়ুম।
মামলার অভিযোগে বলা হয়, ২৮ আগস্টে সকাল ১১টার দিকে মামলার বাদী দেখতে পান, বেশকিছু লোক রিপোর্টার্স ইউনিটির অডিটরিয়ামে কিছু লোককে ঘেরাও করে আওয়ামী ফ্যাসিস্ট বলে স্লোগান দিচ্ছে এবং সাবেক মন্ত্রী আব্দুল লতিফ সিদ্দিকী বক্তব্য দিচ্ছেন।
লতিফ সিদ্দিকীকে জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, ‘‘মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস মুছে ফেলার গভীর ষড়যন্ত্র ও মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস বিকৃতি বন্ধের লক্ষ্যে গত ৫ই আগস্ট ‘মঞ্চ ৭১’ নামে একটি সংগঠনের আত্মপ্রকাশ ঘটে। এই সংগঠনের উদ্দেশ্য জাতির অর্জনকে মুছে ফেলার সব ষড়যন্ত্র প্রতিহত করতে বাংলাদেশের জনগণকে সঙ্গে নিয়ে আত্মত্যাগের প্রস্তুতি নেওয়া। প্রস্তুতির অংশ হিসেবে ওইদিন একটি গোল টেবিল বৈঠকের আয়োজন করা হয়।’’
জিজ্ঞাসাবাদে আরও জানা যায়, ‘উক্ত গোল টেবিল বৈঠকে গ্রেপ্তার হওয়া আসামিরাসহ আরও ৭০-৮০ জন অংশগ্রহণ করেন। পরে পুলিশ আসামিদের হেফাজতে নেন।’
উপস্থিত লোকজনদের জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, ‘আব্দুল লতিফ সিদ্দিকী (৭৫) মঞ্চ ৭১ এর ব্যানারকে পুঁজি করে প্রকৃতপক্ষে দেশকে সশস্ত্র সংগ্রামের মাধ্যমে অস্থিতিশীল করে বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে উৎখাত করার ষড়যন্ত্র ও উপস্থিত অন্যদের প্ররোচিত করে বক্তব্য প্রদান করছিলেন। তার এই ষড়যন্ত্রমূলক বক্তব্যের জন্য উপস্থিত লোকজন তাদেরকে ঘেরাও করে আওয়ামী ফ্যাসিস্ট বলে স্লোগান দিচ্ছিলেন। পরস্পর সহায়তাকারী হিসেবে তারা দেশকে অস্থিতিশীল করে বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে উৎখাত করার ষড়যন্ত্র ও প্ররোচনার অপরাধ করেছেন।’