যৌতুকের দাবিতে স্ত্রীকে শ্বাসরোধ করে ‘হত্যাচেষ্টার’ অভিযোগে মো. নুরুদ্দিন রাসেল (৩৩) নামে একজনকে কারাগারে পাঠিয়েছেন সিএমএম আদালত । অভিযুক্ত রাসেল একজন প্রতারক,নারী লোভী ও মাদকাসক্ত বলে জানিয়েছেন তার স্ত্রী ।
মামলার অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, মিরপুরের বাসিন্দা পেশায় সাংবাদিক এক নারীর সঙ্গে ২০২৩ সালের ৮ ডিসেম্বর ৮ লাখ টাকা কাবিনে রাসেলের বিয়ে হয়।সেসময় ঐ নারী সাংবাদিকের পরিবার রাসেলকে স্বর্ণের আংটি, চেইন, হাত ঘড়ি উপহার হিসেবে দেয়। অভিযুক্ত রাসেল কিছুদিন ব্যবসা করলেও বিয়ের পর শ্বশুরবাড়িতেই থাকা শুরু করেন। এমনকি, স্ত্রীর ভরণপোষণ বাবদ সংসারে কোনো খরচ দিতেন না।
মাদকের টাকা জোগাড় করতে সে অনেক নারীকে ভালবাসার ফাঁদে ফেলতো,তাঁরপর টাকা পয়সা,মান সম্মান নষ্ট করে পালাতো।এমনই এক ভুক্তভোগি নারী সাংবাদিক বিগত রোববার (১৯ জানুয়ারি) রাসেলের মারধরে রূপনগর থানায় স্বামীর বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন।অভিযুক্ত রাসেল চট্টগ্রামের মীরসরাই থানার পূর্ব মঠবাড়িয়া গ্রামের মৃত শামসুদ্দিনের ছেলে। বর্তমানে গাজীপুর জেলার টঙ্গীতে বসবাস করেন তিনি।
ভুক্তভোগি নারী সাংবাদিক লিমা বলেন, বিয়ের কয়েকমাস পর রাসেল ব্যবসার কথা বলে ১০ লাখ টাকা যৌতুক দাবি করেন। অস্বীকৃতি জানালে তাকে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন সইতে হয়। দিন দিন নির্যাতনের মাত্রা বাড়তে থাকলে একসময় লিমা পরিবার থেকে বিভিন্ন সময়ে মোট ৫ লাখ টাকা স্বামীকে এনে দেন। এতেও সন্তুষ্ট করা যায়নি। কিছুদিন পর আবারও বাকি ৫ লাখ টাকার চাপ দিতে থাকেন। অস্বীকৃতি জানালে ফের মারধর করেন।
একাধিকবার হত্যারও চেষ্টা করেন— অভিযোগে বলা হয়। অভিযোগে আরও তুলে ধরা হয়, চলতি বছরের ১৪ জানুয়ারি রাত আনুমানিক আড়াইটায় রাসেল রুমে প্রবেশ করে স্ত্রীকে গলা চেপে শ্বাসরুদ্ধ করার চেষ্টা করেন। মহিলা অসুস্থ হয়ে সেদিনই কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা গ্রহণ করেন। এ সময় তাকে জানানো হয়, যৌতুকের বাকি টাকা না দিলে তাকে তালাক দেবেন রাসেল। অথচ শত অত্যাচার সহ্য করেও সংসার করতে চেয়েছি। কিন্তু দিন দিন স্বামীরূপী এই অমানুষের নির্যাতন বেড়েই চলছিল।
আমাকে মেরে ফেলারও চেষ্টা করা হয়েছে। আমি এর সঠিক বিচার চাই।’এ ব্যাপারে ডিএমপির রুপনগর থানায় নারী ও শিশু নিযাতন মামলা/এজাহার হয়েছে যার নং ৯ তারিখ ১৯/১/২০২৫।
অন্যদিকে সিএমএম কোর্টেও মামলা করেন ভুক্তভোগি। রুপনগর থানার মামলার সত্যতা নিশ্চিত করে তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই মেহরুল ও ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা(ওসি) । তাঁরা প্রতিদিন নানা কৌশলে, নানা জায়গায় তাকে ধরার চেষ্টা করেন।ধৃত রাসেল গাঢাকা দিয়ে থাকে।রুপনগর থানার ওসি ও মিরপুর জোনের ডিসির বিশেষ তৎপরতায় এক প্রকার বাধ্য হয়ে সিএমএম কোর্টের ১২ নাম্বার আদালতে আত্মসমর্পণ করেন রাসেল।মাননীয় আদালতের ম্যাজিস্ট্রেট আবদুল ওহাব উভয় পক্ষের আইনজীবীর কথা শুনে রাসেল কে জেলহাজতে পাঠান।
মিরপুর জোনের ডিসি বলেন “আমরা পুলিশ এখন জনগণের বন্ধু ও অপরাধীদের ঘুম কেড়ে নিতে চাই। আসামী জেলে গেছেন,বাদী নিশ্চয়ই সুবিচার পাবে”। রুপনগর থানার ওসি জানান “আমরা শুরু থেকেই মামলাটির ব্যাপারে আন্তরিক ছিলাম,আসামী ধরার ব্যাপারে তৎপর ছিলাম।এখন সুবিচারের ব্যবস্থা করা হবে পুলিশের পক্ষ থেকে”।
মামলার বাদী বলেন আমি ন্যায় ও দৃষ্টান্তমূলক বিচার চাই যেন এই কুলাংগার আর কোন মেয়ের জীবন নষ্ট করতে না পারে এটাই আমার চাওয়া।