বুধবার, ০৫ নভেম্বর ২০২৫, ০৬:৩২ অপরাহ্ন
শিরোনাম :
শিরোনাম :
সাংবাদিকরা সত্য তুলে ধরায় পার্শ্ববর্তী দেশ থেকে গুজব অনেকটা কমেছে: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জাহাঙ্গীর আলম স্ত্রীসহ অবসরপ্রাপ্ত ব্রিগেডিয়ার জেনারেল সেলিম মাহমুদের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা জয়, পুতুল ও ববিসহ ৮ জনের নামে মামলার অনুমোদন পুলিশের অভিযানে গ্রেপ্তার ১৭৪৮ জন ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গুতে ১০ জনের মৃত্যু ঢাকা জেলার আগ্নেয়াস্ত্র লাইসেন্সসমূহ ২০২৬ সালের জন্য নবায়নের সময় নির্ধারণ ‘বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ অধ্যাদেশ ২০২৫’ এর খসড়া প্রকাশ প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন যমুনা ও পার্শ্ববর্তী এলাকায় সভা-সমাবেশে নিষেধাজ্ঞা দিলো ডিএমপি নিউজার্সির প্রথম নারী গভর্নর নির্বাচিত হয়ে ইতিহাস গড়লেন শেরিল ভার্জিনিয়ার প্রথম নারী গভর্নর হয়ে ইতিহাস গড়লেন অ্যাবিগেল

বিবেকের তাড়নায় ঘরে বসে থাকতে পারেননি মনিরুজ্জামান, পঙ্গুত্বের ভারে তিনি এখন অসহায়

নিউজ ডেস্ক | মেট্রোটাইমসটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট : মঙ্গলবার, ৪ ফেব্রুয়ারী, ২০২৫, ১২:৫৩ অপরাহ্ন
আহত মো: মনিরুজ্জামান -ছবি : বাসস

বাংলাদেশের সকল আন্দোলন সংগ্রামে এদেশের সাধারণ মানুষ যেভাবে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে রাস্তায় নেমেছে, মিছিল করেছে তেমনি তারা প্রাণও দিয়েছে। এবারেও তার ব্যতিক্রম হয়নি। বরং অনেক বৃৃহৎ পরিসরে ব্যাপকভাবে মানুষ খুনি হাসিনার পদত্যাগের দাবিতে রাস্তায় নেমেছে। জীবন দিয়েছে অকাতরে।

একরমই একজন মো: মনিরুজ্জামান। কোটা সংস্কারের আন্দোলন যখন একপর্যায়ে একদফায় রূপান্তর হয় তখন তার পক্ষে ঘরে বসে থাকা সম্ভব হয়নি। রাস্তায় নেমেছেন, মিছিলে শরিক হয়েছেন তিনি। বিশেষ করে ১৬ জুলাই রংপুরের আবু সাঈদের হত্যাকাণ্ডে পুরো দেশবাসীর বিবেক যখন নড়ে ওঠে মনিরুজ্জামানও আর স্থির থাকতে পারেননি।  যোগ দেন বৈষম্য বিরোধী ছাত্র জনতার আন্দোলনে। শিকার হন পুলিশের নির্মমতার।

গত ২০ জুলাইও মনিরুজ্জামান ছিলেন মিছিলে। সেদিন মানিক নগর বিশ্বরোড়ের কাছে বিকেল আনুমানিক সাড়ে পাঁচটায় পুলিশের চাইনিজ রাইফেলের গুলিতে মারাত্মক আহত হন। বুলেট ডান পায়ের পেছন থেকে লেগে সামনে দিয়ে বের হয়ে যায়। আশংকাজনক অবস্থায় মনিরুজ্জামানকে দ্রুতই ঢাকা জাতীয় অর্থপেডিক হাসপাতালে নেয়া হয়। সেখানে অস্ত্রোপচার করে লোহার রিং পরানো হয় পায়ে।

এখন তিনি বিছানায়। যন্ত্রণায় কাতরাচ্ছেন। কারণ পুরোপুরি সুস্থ হতে পারেননি। বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামির কাছ থেকে নগদ ৫০ হাজার টাকা অনুদান পেয়েছেন। অথচ মনিরুজ্জামানের সুস্থ হতে দরকার অনেক টাকা।

আহত মো: মনিরুজ্জামান -ছবি : বাসস

আহত মো: মনিরুজ্জামান -ছবি : বাসস

আহত মনিরুজ্জামান জানান, তিনি একজন দেশপ্রেমিক পুলিশ অফিসারের সন্তান। তার বাবা সৎ এবং একজন আদর্শিক মানবীয় গুণাবলীর অধিকারী। তিনি তার আন্দোলনে যোগ দেয়াকে সমর্থন করেছিলেন।

তিনি বলেন, দেশ যখন ছিল পরাধীনতার শৃঙ্খলে আবদ্ধ, দেশের রাষ্ট্রীয় কোষাগার থেকে হাজার কোটি টাকা লুণ্ঠিত হচ্ছিল, হুন্ডির মাধ্যমে পাচার হচ্ছিল হাজার হাজার কোটি টাকা এবং নিরীহ জনগণের ওপর চালানো হচ্ছিল গুলি তখন আমিও ঘরে বসে থাকতে পারিনি। নেমেছিলাম রাজপথে।

তিনি হতাশার সুরে  বলেন, কিন্তু এখন আমি পঙ্গু। সুস্থ হওয়ার জন্যে দরকার লাখ লাখ টাকা। আমরা এ অর্থ পাবো কোথায়?

এ সময়ে ক্ষোভ আর হতাশাকে চাপা দিতে গিয়ে কান্না শুরু করেন তিনি।

মনিরুজ্জামান (৪০) গত ১৫ বছর ধরে ঢাকায় অবস্থান করে চাকরি করতেন ব্র্যাক ইপিএল স্টক ব্রোকারিজে। এখন তিনি সম্পূর্র্ণ বেকার হয়ে পড়েছেন। থাকতেন ঢাকার ৯৯/ডি মানিক নগরে।

তার স্থায়ী ঠিকানা বাগেরহাট পৌরসভার ৩ নম্বর ওয়ার্ডের দশানী বালিকা বিদ্যালয় সড়কের কাছে। মনিরুজ্জামানের পিতা মোঃ রুস্তম আলী (৭৫) অবসরপ্রাপ্ত পুলিশ কর্মকর্তা, মা মজিনা খাতুন (৬৫), গৃহিণী।
মনিরুজ্জামান সহ তারা চার ভাই বোন। তাদের মধ্যে তিনি বড়। দ্বিতীয় মুক্তরুজ্জামান (৩৮) এডভোকেট, তৃতীয় বোন মোচ্ছামাত রওশনারা রুনা (৩৪) বিবাহিত, চতুর্থ ভাই মোঃ মহিনুজ্জামান (৩১), বেসরকারি চাকরিজীবী।

আহত মনিরুজ্জামানের স্ত্রী সোহেলী সুলতানা (২৯)। এ দম্পতি নিঃসন্তান। সোহেলীর বাবার নাম মিজানুর রহমান (৫২)। তিনি প্রবাসী।  মা কোয়েলা বেগম পিরোজপুর সদরের কালিবাড়ির স্থায়ী বাসিন্দা।

মোঃ মনিরুজ্জামান বর্তমানে বাবা মায়ের সাথে বাগেরহাটেই অবস্থান করছেন। অসুস্থ ও পঙ্গু অবস্থায় পরিবারের বোঝা হয়ে দিন কাটছে তার।

মনিরুজ্জামানের বাবা মা ছেলের চিকিৎসায় সংশ্লিষ্ট সকলকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান।

তারা বলেন, উন্নত চিকিৎসা না পেলে ছেলে চিরতরে পঙ্গু হয়ে যেতে পারে বলে চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন। তাই অতি দ্রুত ছেলের চিকিৎসা শুরু করা দরকার। না হলে হয়ে যেতে পারে অনেক বড়ো ক্ষতি।-বাসস


এই ক্যাটাগরির আরও সংবাদ
এক ক্লিকে বিভাগের খবর