তৃতীয় ধাপের উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে সাবেক ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরীর অনুসারী তৌহিদুল হক চৌধুরীকে ২২ হাজার ২৩ ভোটের বড় ব্যবধানে হারালেন অর্থ প্রতিমন্ত্রী ওয়াসিকা আয়শা খানের অনুসারী কাজী মোজাম্মেল হক। ওয়াসিকার প্রার্থী কাজী মোজাম্মেল হক পান ৫৮ হাজার ৮৩০ ভোট। আর সাইফুজ্জামানে প্রার্থী তৌহিদুল হক চৌধুরী পান ৩৬ হাজার ৮০৭ ভোট।
রাজনীতি–সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, কাজী মোজাম্মেল হকের কাছে তৌহিদুল হক চৌধুরীর হারের মধ্য দিয়ে আঞ্চলিক রাজনীতিতে ওয়াসিকা আয়শা খানের প্রভাব বাড়বে।
নেতা-কর্মীদের সঙ্গে আলাপ করে জানা গেছে, এবার মন্ত্রিসভায় সাবেক ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরীর স্থান না হলেও সংরক্ষিত আসনের সদস্য এবং আওয়ামী লীগের অর্থ ও পরিকল্পনা সম্পাদক ওয়াসিকা আয়শা খানকে অর্থ প্রতিমন্ত্রী করা হয়। ওয়াসিকা প্রতিমন্ত্রী হিসেবে স্থান পাওয়ার পর তৃণমূল আওয়ামী লীগের ব্যানারে আনোয়ারা ও কর্ণফুলীতে একাধিক সংবর্ধনা ও আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়। এসব সভায় অংশ নেওয়া ব্যক্তিদের বেশির ভাগই দলের সাবেক ও পদবঞ্চিত নেতা। তবে উপজেলা চেয়ারম্যান পদে তার অনুসারী হওয়ায় নতুন করে তার দিকে ভিড়বে নেতাকর্মীরা এমন কথাও শুনা যাচ্ছে। আনোয়ারা ও কর্ণফুলীর রাজনীতিতে এখন সরগরম দুই পরিবার।
নেতা-কর্মীরা আরও বলেন, এবার উপজেলা পরিষদের তফসিল হওয়ার আগে থেকে চেয়ারম্যান পদে লড়ার জন্য তৌহিদুল হক চৌধুরীকে সবুজ সংকেত দেন সাবেক ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী। এ কারণে মাঠে-ময়দানে সক্রিয় থাকেন দুইবারের এই জনপ্রতিনিধি। কিন্তু তফসিল ঘোষণা হলে দলের বর্ধিত সভা করে প্রার্থী ঘোষণা করা হয় দলের সভাপতি এম এ মান্নান চৌধুরীকে। ওই সভায় উপস্থিত থেকে সমর্থন দেন সাইফুজ্জামান চৌধুরী। তবে একই দিন অর্থ প্রতিমন্ত্রী ওয়াসিকা আয়শা খানের অনুসারী কাজী মোজাম্মেল হককে চেয়ারম্যান পদে প্রার্থী হিসেবে ঘোষণা করা হয়।
এদিকে এম এ মান্নান চৌধুরীকে সমর্থন দেওয়ার পর মনোনয়ন প্রত্যাহারের সময় চলে গেলে ২২ মে তৌহিদুল হক চৌধুরীকে সমর্থন দেন সাইফুজ্জামান চৌধুরী। ভোটের এক সপ্তাহ আগে সাইফুজ্জামানের সমর্থন বদল সার্বিকভাবে নেতিবাচক প্রভাব ফেলে। দুই প্রার্থীর সমর্থকদের একসঙ্গে তৌহিদুলের পক্ষে কাজ করতে নির্দেশ দিয়েছিলেন সাবেক ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী। তবে সেটি শেষ পর্যন্ত হয়নি।
এম এ মান্নানের অনেক অনুসারী নিষ্ক্রিয় হয়ে গেছেন। উপজেলার ১০ ইউনিয়নের চেয়ারম্যানরাও বিব্রতকর পরিস্থিতিতে পড়েন। আর এতে নির্বাচনে নেতিবাচক প্রভাব পড়ে। নেতা-কর্মীরা বলেন, ঐক্যবদ্ধ থাকলেও অনেকেই আন্তরিকভাবে কাজ করেননি, তাই তৌহিদুল হক চৌধুরীর ভরাডুবি হয়েছে।
আওয়ামী লীগের এক নেতা বলেন, বটতলী ইউনিয়ন পরিষদ থেকে পদত্যাগ করিয়ে এম এ মান্নানকে প্রার্থী করা হয়। এরপর আবার তাকে ভোট থেকে সরিয়েও দেওয়া হয়। বিষয়টি এলাকাবাসী ভালোভাবে নেননি। তারই প্রতিক্রিয়া পড়েছে ভোটের ফলাফলে।সুত্রঃসময় নিউজ