জ্যামাইকায় দিবা-রাত্রির টেস্টের তৃতীয় দিনে যেন আগুন ঝরালেন মিচেল স্টার্ক। ক্যারিয়ারের শততম টেস্টে বল হাতে রেকর্ড গড়া পারফরম্যান্সে মাত্র ৯ রানে ৬ উইকেট তুলে নিলেন অভিজ্ঞ এই বাঁহাতি পেসার। তার বিধ্বংসী স্পেলে ভেঙে পড়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজের ব্যাটিং লাইনআপ। পরে স্কট বোল্যান্ড যোগ দেন উইকেট শিকারের মিছিলে, হ্যাটট্রিক করে ক্যারিবীয়দের ইনিংস গুটিয়ে দেন মাত্র ২৭ রানে।
ঘরের মাঠে তিন ম্যাচের সিরিজে হোয়াইটওয়াশ হওয়ার পাশাপাশি তৃতীয় ও শেষ টেস্টে তার দল গুটিয়ে গেছে মাত্র ২৭ রানে যা টেস্ট ইতিহাসে দ্বিতীয় সর্বনিম্ন দলীয় সংগ্রহ!
জ্যামাইকার কিংস্টনে সাবিনা পার্কে অনুষ্ঠিত তৃতীয় টেস্টে অস্ট্রেলিয়ার দেওয়া ২০৪ রানের সহজ লক্ষ্য তাড়ায় ১৪.৩ ওভার টিকতেই পারেনি ক্যারিবীয়রা। এমন লজ্জার হার ও রেকর্ড গড়া পারফরম্যান্সের পর ম্যাচ শেষে চেজ বলেন,‘এটি হৃদয়বিদারক এবং বিব্রতকর।’ আর মাত্র একটি রানের জন্য ১৯৫৫ সালে নিউজিল্যান্ডের গড়া ২৬ রানে অলআউট হওয়ার লজ্জাজনক রেকর্ড ভাঙা থেকে বেঁচে গেছে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। সেটিই এখন পর্যন্ত টেস্ট ইতিহাসের সর্বনিম্ন দলীয় ইনিংস। ওয়েস্ট ইন্ডিজের এটি দ্বিতীয় সর্বনিম্ন।
এই ধসের শুরুটা হয় প্রথম ওভারেই, মিচেল স্টার্ক একাই তুলে নেন ৩ উইকেট। পুরো ইনিংসে ৬ উইকেট শিকার করে ক্যারিবীয় ব্যাটিং লাইনআপ গুঁড়িয়ে দেন। তার পাশাপাশি ইতিহাসের মাত্র দশম বোলার হিসেবে হ্যাটট্রিক করে ইতিহাসে নাম লেখান স্কট বোল্যান্ড।
অস্ট্রেলিয়ার বোলিং তোপে ওয়েস্ট ইন্ডিজের সাত ব্যাটার শূন্য রানে (ডাক) ফিরে যান। টপঅর্ডারের ছয় ব্যাটার মিলেও করতে পারেননি মোট ১০ রান, তাদের সম্মিলিত রান মাত্র ৬! যা টেস্ট ইতিহাসে টপ অর্ডারের সর্বনিম্ন সম্মিলিত সংগ্রহ। পুরো ইনিংস গুটিয়ে যায় মাত্র ১৪.৩ ওভারে, যা টেস্ট ক্রিকেটের ইতিহাসে তৃতীয় সর্বনিম্ন ওভারসংখ্যায় অলআউট হওয়ার ঘটনা।
এই সিরিজের আগের দুই টেস্টেও (১৫৯ ও ১৩৩ রানে) বড় ব্যবধানে জয় পেয়েছিল অস্ট্রেলিয়া। তবে তৃতীয় টেস্টে দুদলই সংগ্রাম করেছে ব্যাটিংয়ে। অস্ট্রেলিয়া প্রথম ইনিংসে করে মাত্র ২২৫, জবাবে ওয়েস্ট ইন্ডিজ থামে ১৪৩ রানে। দ্বিতীয় ইনিংসে অস্ট্রেলিয়া গুটিয়ে যায় ১২১ রানে। তবে আগের লিড মিলিয়ে ক্যারিবীয়দের সামনে লক্ষ্য দাঁড়ায় ২০৪ রান। সে লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে রোস্টন চেজের দল ২৭ রানেই গুটিয়ে যায় ঘরের মাঠে।