রাজধানীর পুরান ঢাকার মিটফোর্ড এলাকায় ভাঙারি ব্যবসায়ী লাল চাঁন ওরফে সোহাগকে (৩৯) প্রকাশ্যে হত্যার নেপথ্যে ব্যবসায়িক দ্বন্দ্বই মূল কারণ বলে জানিয়েছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি)।
আজ শনিবার (১২ জুলাই) ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান লালবাগ বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিসি) মোহাম্মদ জসীম উদ্দিন।
ডিসি জসীম জানান, গত ৯ জুলাই বিকাল ৫টা ৪০ মিনিট থেকে ৬টার মধ্যে কোতোয়ালি থানান স্যার সলিমুল্লাহ মেডিক্যাল কলেজ (মিটফোর্ড) হাসপাতালের তিন নম্বর গেটের সামনে এবং সংলগ্ন এলাকায় একটি নৃশংস হত্যাকাণ্ড ঘটে। বহু লোক একত্রিত হয়ে মো. সোহাগকে নির্মমভাবে আঘাত করে হত্যা করে।
ঘটনার খবর পেয়ে তাৎক্ষণিকভাবে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছায় এবং সেখান থেকেই দুজনকে গ্রেফতার করে। পরে মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মিটফোর্ড হাসপাতালে পাঠানো হয়।
ডিএমপির তথ্য অনুযায়ী, ঘটনার পেছনে ভাঙারি ব্যবসা নিয়ে অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্ব কাজ করেছে। হত্যাকারীরা ও ভুক্তভোগী সোহাগ একসময় একসঙ্গে ব্যবসা করতেন। কিন্তু সময়ের সঙ্গে সঙ্গে তাদের মধ্যে লেনদেন এবং অংশীদারত্ব নিয়ে বিরোধ সৃষ্টি হয়। একপর্যায়ে তা ভয়াবহ রূপ নিয়ে এ হত্যাকাণ্ডে রূপ নেয়।
“আমরা জানতে পেরেছি, যারা এই হত্যাকাণ্ডে জড়িত এবং যিনি মারা গেছেন, তারা আগে একসঙ্গে কাজ করতেন। পরবর্তীকালে আলাদা হয়ে গেলে দ্বন্দ্ব তৈরি হয়। আর সে দ্বন্দ্বের জেরেই এই মর্মান্তিক ঘটনা ঘটে,” বলেন ডিসি জসীম।
সংবাদ সম্মেলনে পুলিশ জানায়, হত্যাকাণ্ডের পরদিন ১০ জুলাই ভুক্তভোগী সোহাগের বড় বোন কোতোয়ালি থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন (মামলা নম্বর-৭)। এরপর ভিডিও ফুটেজ পর্যালোচনার মাধ্যমে সন্দেহভাজনদের শনাক্ত করা হয়। এ পর্যন্ত পাঁচজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে— যাদের মধ্যে দুজনকে গ্রেফতার করেছে র্যাব ও তিনজনকে করেছে কোতোয়ালি থানা পুলিশ।
এদের রাজনৈতিক পরিচয় সম্পর্কে জানতে চাইলে ডিসি বলেন, “অপরাধের তদন্তে রাজনৈতিক পরিচয় মুখ্য নয়। আমরা এখন পর্যন্ত নির্ভরযোগ্যভাবে নিশ্চিত হতে পারিনি, তারা কোনও রাজনৈতিক দলের সঙ্গে জড়িত কিনা।”
সিসিটিভির ফুটেজ দেখেই আসামি গ্রেপ্তার করা হয়েছে জানিয়ে পুলিশের এই কর্মকর্তা জানান, আসামিদের রাজনৈতিক পরিচয় এখনও নিশ্চিত হওয়া যায়নি। তবে সোহাগের এই হত্যাকাণ্ড, শুধুই ব্যবসায়িক দ্বন্দ্ব নাকি এর পেছনে অন্য কোনো ঘটনা রয়েছে সেটি নিয়ে তদন্ত চলছে। চলমান এই তদন্তে রাজনৈতিক কোনো বিবেচনা আমলে নেয়া হবে না বলেও নিশ্চিত করেন তিনি।