বৃহস্পতিবার, ০৬ নভেম্বর ২০২৫, ০৪:৫৫ অপরাহ্ন
শিরোনাম :
শিরোনাম :
সোনাদিয়া দ্বীপের জীববৈচিত্র্য পুনরুদ্ধারে ৩ কোটি ৩৮ লাখ টাকার প্রকল্প প্রাথমিকের ১০,২১৯ সহকারী শিক্ষকের শূন্য পদে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ হাসিনা, জয় ও পুতুলের দুর্নীতির মামলায় ৭৯ জন সাক্ষীর জবানবন্দি সেনাবাহিনীর কাছে অস্ত্রসহ সাবেক ছাত্রদল নেতা ও তার সাত সহযোগী আটক সাবেক মন্ত্রী লতিফ সিদ্দিকীকে জামিন দিলো হাইকোর্ট বিদেশীদের সঙ্গে সম্পর্ক হবে ৪টি বিষয়ের ওপর ভিত্তি করে: আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বিটিসিএল টেলিকম অফিসার্স অ্যাসোসিয়েশনের আত্মপ্রকাশ সোজা আঙুলে না উঠলে বাঁকা করব, তবে ঘি আমাদের লাগবেই: জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির এক্সিম ব্যাংকের সাবেক এমডি ফিরোজ হোসেন গ্রেপ্তার মামদানির জয়ে আমরা সার্বভৌমত্ব হারিয়েছি: ডোনাল্ড ট্রাম্প

আওয়ামীলীগ নিষিদ্ধ ও নারী সংস্কার কমিশন বাতিলসহ হেফাজতে ইসলামের ১২ দফা ঘোষণা

নিজস্ব প্রতিবেদক। মেট্রোটাইমসটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট : শনিবার, ৩ মে, ২০২৫, ৩:২৭ অপরাহ্ন

 

আওয়ামীলীগ নিষিদ্ধ ও বিচার আর নারী সংস্কার কমিশন বাতিলসহ ১২ দফা ঘোষণাপত্র দিয়েছে হেফাজতে ইসলাম ।

আজ শনিবার (৩ মে) দুপুরে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের সমাবেশে ঘোষণাপত্রটি পাঠ করেন সংগঠনটির নায়েবে আমীর মাওলানা মাহফুজুল হক।

হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের আমির মাওলানা শাহ্ মুহিব্বুল্লাহ্ বাবুনগরী বলেছেন, কোরআন-সুন্নাহবিরোধী কোনও আইন মেনে নেওয়া হবে না।  নারী সংস্কার কমিশন ভেঙে দিয়ে পুনর্গঠন করতে হবে। হেফাজতে ইসলাম নারীদের অধিকার ও মূল্যবোধের পক্ষে।

হেফাজতের ১২ দফা দাবিগুলো হচ্ছে-

 

১. নারীবিষয়ক সংস্কার কমিশন ও তাদের কোরআন বিরোধী প্রতিবেদন অবিলম্বে বাতিলপূর্বক আলেম-ওলামাদের পরামর্শক্রমে ধর্মপ্রাণ বৃহত্তর নারী সমাজের প্রতিনিধিদের অন্তর্ভুক্ত করে নতুন কমিশন গঠন করতে হবে। নারীর সামাজিক উন্নয়নে পশ্চিমা মূল্যবোধ নয়, বরং আমাদের নিজস্ব সামাজিক ও ধর্মীয় মূল্যবোধ ইতিহাস ও ঐতিহ্যের আলোকেই বাস্তবমুখী সংস্কারের দিকে যেতে হবে।

২. সংবিধানে আল্লাহর ওপরে পূর্ণ আস্থা ও বিশ্বাস পুনঃস্থাপন করতে হবে। ধর্মপ্রাণ গণমানুষের ঈমান ও আমল রক্ষার্থে বহুত্ববাদ নামক আত্মঘাতী ধারণা থেকে সরকারকে সরে আসতে হবে। এছাড়া লিঙ্গ পরিচয়, লিঙ্গ বৈচিত্র্য, লিঙ্গ সমতা, তৃতীয় লিঙ্গ বা থার্ড জেন্ডার ইত্যাদি শব্দের মারপ্যাঁচে, কাউকে বাদ দিয়ে নয় এমন ধোঁয়াশাপূর্ণ স্লোগানের অন্তরালে এবং অসাম্প্রদায়িক ও অন্তর্ভুক্তিমূলক শব্দের আড়ালে এলজিবিটি ও ট্রান্সজেন্ডারবাদের স্বীকৃতি ও অন্তর্ভুক্তির মাধ্যমে সমাজবিধ্বংসী ধর্মবিরুদ্ধ সমকামীবান্ধব সমাজ প্রতিষ্ঠার পাঁয়তারা বন্ধ করতে হবে।

৩. শাপলা চত্বর ও জুলাই গণহত্যার বিচারে গতি আনতে ট্রাইব্যুনালে সক্ষমতা আরও বৃদ্ধি করতে হবে। জাতীয় নির্বাচনের আগেই শেখ হাসিনা ও তার চিহ্নিত দোসরদের বিচার নিশ্চিত করতে হবে।

৪. গণহত্যাকারী ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগকে সন্ত্রাসী দল হিসেবে নিষিদ্ধ ঘোষণা করব বিচার নিশ্চিত করতে হবে। বিচার নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত তাদের কার্যক্রম ও তৎপরতা নিষিদ্ধ করতে হবে।

৫. আল্লাহ ও তার রাসুল (সা.) এর নামে কটূক্তিকারী ও বিষোদ্‌গার বন্ধে কঠোর আইন করতে হবে। গণমাধ্যম সংস্কার কমিশনের পক্ষ থেকে ইতোমধ্যে ধর্মীয় অবমাননা সংক্রান্ত শাস্তির আইনি ধারাগুলো বাদ দেওয়ার সুপারিশ বাতিল করতে হবে। এ ব্যাপারে কোনো ধরনের ছাড় দেওয়া হবে না।

৬. চট্টগ্রামে উগ্র হিন্দুত্ববাদীদের হাতে শহীদ সাইফুল ইসলাম হত্যার উসকানিদাতা চিন্ময় দাসের জামিন প্রত্যাহারপূর্বক তার দৃষ্টান্তমূলক বিচার করতে হবে।

৭. ফ্যাসিস্ট হাসিনার শাসনামলে সারা দেশে প্রতিবাদী আলেম-ওলামা ও মাদ্রাসার শিক্ষার্থী ও ইসলামমনা তরুণদের বিরুদ্ধে হওয়া মিথ্যে ও বানোয়াট সব মামলা অতিসত্বর প্রত্যাহার বা নিষ্পত্তি করতে হবে অন্তর্বর্তী সরকারকে। সেই সঙ্গে জঙ্গি নাটক বা জঙ্গি কার্ড খেলে বাংলাদেশকে ইসলামপন্থি ও আলেম-ওলামাদের গত ১৫ বছর যারা নির্যাতন চালিয়েছিল তাদের দৃষ্টান্তমূলক বিচার নিশ্চিত করতে হবে।

৮. গাজার মুসলমানদের ওপর অবৈধ রাষ্ট্র ইসরায়েলের চলমান গণহত্যা ও ভারতে সংখ্যালঘু মুসলিম নির্যাতনের প্রতিবাদে আমাদের গণঅভ্যুত্থান পরবর্তী এই সরকারকে কূটনৈতিকভাবে আরও উচ্চকণ্ঠ হতে হবে এবং দেশের সর্বস্তরের জনতাকে ইসরায়েলি ভারতীয় পণ্য বয়কট করতে হবে।

৯. ৯০ শতাংশ মুসলমানের দেশ। শিক্ষার প্রাথমিক পর্যায়ে থেকে উচ্চ পর্যায় পর্যন্ত সর্ব পর্যায়ে ইসলামী শিক্ষা ব্যবস্থা বাধ্যতামূলক করতে হবে।

১০. রাখাইনকে মানবিক করিডোর প্রদানে সরকারের সম্মত হওয়া সম্পূর্ণরূপে আত্মঘাতী সিদ্ধান্ত। আমাদের ভৌগোলিক নিরাপত্তার স্বার্থে এ অপরিণামদর্শী সিদ্ধান্ত থেকে সরকারকে অবশ্যই অনতিবিলম্বে ফিরে আসতে হবে।

১১. চট্টগ্রামের পার্বত্য অঞ্চলে ভিনদেশি মিশনারি অপতৎপরতা ও দৌরাত্ম্য বন্ধে সরকারকে উদ্যোগ নিতে হবে বাংলাদেশে ভৌগোলিক ও খণ্ডতায় ও নিরাপত্তা সংকট কমাতে আলেম সমাজের দাওয়াতি কার্যক্রমকে আরও নিরাপদ ও সুযোগ করে দিতে হবে। সেখানে সামরিক নিরাপত্তা ব্যবস্থা আরও বৃদ্ধি করা ছাড়াও পাহাড়ি ও নৃতাত্ত্বিক জনগোষ্ঠীর মধ্যে সামাজিক ও রাজনৈতিক সমঝোতা ও স্থিতিশীলতা বিনির্মাণে রাষ্ট্রীয় তৎপরতা আরও বাড়াতে হবে।

১২. কাদিয়ানীদের বাংলাদেশের রাষ্ট্রীয়ভাবে নিষিদ্ধ ঘোষণা করতে হবে। সাধারণ মুসলমানদের ঈমান আকিদা রক্ষার্থে কাদিয়ানীদের অপতৎপরতা বন্ধ করতে হবে।

মহাসমাবেশে হেফাজতের আমির মাওলানা শাহ্ মুহিব্বুল্লাহ্ বাবুনগরীর সভাপতিত্বে সংহতি জানিয়ে বক্তব্য রাখেন— দৈনিক আমার দেশের সম্পাদক মাহমুদুর রহমান, আলোচিত ইসলামি বক্তা ও জৌনপুরের পীর মুফতি ড. এনায়েত উল্লাহ আব্বাসী, জাতীয় নাগরিক পার্টি-এনসিপির দক্ষিণাঞ্চলীয় মুখ্য সংগঠক হাসনাত আব্দুল্লাহ।

হেফাজত নেতাদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন— নায়েবে আমির মাওলানা উবায়দুল্লাহ ফারুক, ড. আহমদ আবদুল কাদের, মাওলানা সালাহউদ্দিন নানুপুরী, মুফতি জসীম উদ্দিন, মাওলানা আব্দুল আউয়াল, সরোয়ার কামাল আজিজি, মহিউদ্দিন রাব্বানী, আহমেদ আলী কাসেমী, মাওলানা খুরশিদ আলম কাসেমী, মাহবুব জাকারিয়া, মাওলানা আব্দুল কাদের, মাওলানা আইউব বাবুনগরী, মাওলানা আফজালুর রহমান।

যুগ্ম মহাসচিবদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন, মাওলানা মামুনুল হক, মঞ্জুরুল ইসলাম আফেন্দী, জুনায়েদ আল হাবিব, খালেদ সাইফুল্লাহ আইয়ূবী, হাসান জামিল,মুফতি সাখাওয়াত হোসাইন রাজী,মাওলানা মুসা বিন ইজহার, ইসলামী বক্তা মূফতি রেজাউল করিম আবরার, মুফতি ফখরুল ইসলাম, মুফতি মনির হোসেন কাসেমী, চরমোনাই পীরের সাহেবজাদা, সৈয়দ ইসহাক মোহাম্মদ আবুল খায়ের, মুফতি খলিলুর রহমান নেছারাবাদী ও মধুপুরের পীর মাওলানা আব্দুল হামিদ প্রমুখ।

মহাসমাবেশের শেষ পর্যায়ে দুই দফা নতুন কর্মসূচি ঘোষণা করে হেফাজতে ইসলামের মহাসচিব মাওলানা সাজিদুর রহমান  বলেন, নারীর অধিকার প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে চলতি বছরের মধ্যে বিভাগীয় সম্মেলন করা হবে এবং ২৩ মে বিক্ষোভ মিছিলের মাধ্যমে এই আন্দোলনকে আরও তীব্র করা হবে।


এই ক্যাটাগরির আরও সংবাদ
এক ক্লিকে বিভাগের খবর