বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় রাজধানীর বিভিন্ন থানার পৃথক মামলায় আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য আমির হোসেন আমু, সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বাণিজ্য উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান, সাবেক মন্ত্রী ডা. দীপু মনি, অভিনেত্রী শমী কায়সারসহ ১০ জনকে গ্রেফতার দেখানোর আবেদন মঞ্জুর করেছেন আদালত।
আজ বুধবার (৯ এপ্রিল) ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট জি এম ফারহান ইশতিয়াক শুনানি শেষে এ আদেশ দেন।
গ্রেফতার হওয়া অপর আসামিরা হলেন- ওয়ার্কাস পার্টি সভাপতি রাশেদ খান মেনন, সাবেক এমপি হাজী সেলিম, সাদেক খান, আব্দুল্লাহ আল ইসলাম জ্যাকব, সাবেক দুই আইজিপি শহীদুল হক ও চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুন।
এদিন সকাল ৯টায় তাদের ঢাকার সিএমএম আদালতের হাজতখানায় হাজির করে পুলিশ। এরপর ১০টা ১৫ মিনিটে তাদের আদালতের এজলাসে হাজির করা হয়।
দাঁড়িয়ে হাজী সেলিম তার আইনজীবীর ওপর রেগে যান।
ওকালতনামায় স্বাক্ষর করতেও অস্বীকৃতি জানান। পরে আইনজীবী তাকে বোঝালে তিনি স্বাক্ষর করেন।
এ বিষয়ে তার আইনজীবী প্রাণ নাথ বলেন, আমার মক্কেল কথা বলতে পারেন না। কারাগারে খাবার খেতে পারেন না। কাউকে কোনো কিছু বোঝাতে পারেন না।
এই অভিমানে আমার ওপর রেগে গিয়েছিলেন। এজন্য তিনি ওকালতনামায় স্বাক্ষর করতে চাইছিলেন না। কিছুক্ষণ বোঝানোর পর তিনি স্বাক্ষর করেন। তাকে বলেছি, সিস্টেমের বাইরে তো কিছু করতে পারব না।
তিনি আরও বলেন, আমার মক্কেলকে ১৯ মামলায় গ্রেফতার দেখানো হয়েছে। বিভিন্ন মামলায় রিমান্ডে নেওয়া হয়েছে। এখনো ১০ দিনের রিমান্ড চলমান রয়েছে।
আদালত সূত্রে জানা যায়, যাত্রাবাড়ী থানার সাজেদুর রহমান ওমর হত্যা মামলায় আমির হোসেন আমু, সালমান এফ রহমান, ডা. দীপু মনি, শহীদুল হক, হাজী সেলিম, চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুনকে গ্রেফতার দেখায় আদালত।
এছাড়া শাহবাগ থানার মনির হোসেন হত্যা মামলায় রাশেদ খান মেনন, ভাটারা থানার হত্যাচেষ্টা মামলায় আব্দুল্লাহ আল জ্যাকব, মোহাম্মদপুর থানার মামলায় সাদেক খান, উত্তরা পূর্ব থানার জুবায়ের ইউসুফ হত্যাচেষ্টা মামলায় শমী কায়সারকে গ্রেফতার দেখানো হয়।
সালমান এফ রহমানসহ ৬ জনকে গ্রেফতার দেখানোর মামলায় জানা যায়, বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন চলাকালে গত ২১ জুলাই দুপুর আড়াইটায় যাত্রাবাড়ী থানাধীন ফুটওভার ব্রিজ নিচে ছাত্রজনতার সঙ্গে আন্দোলনে অংশ নেন সাজেদুর রহমান ওমর।
পরে বিকেলে আসামিদের আক্রমণে মাথায় গুলিবিদ্ধ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি চিকিৎসাধীন অবস্থায় ২৪ আগস্ট মারা যান। এ ঘটনায় এ বছরের ৩ জানুয়ারি যাত্রাবাড়ী থানায় মামলা হয়।
শমী কায়সারকে গ্রেফকার দেখানো মামলায় জানা গেছে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন চলাকালে গত ৪ আগস্ট টঙ্গী সরকারি কলেজের অনার্স ১ম বর্ষের শিক্ষার্থী জুবায়ের হাসান ইউসুফ আন্দোলনে অংশ নেন।
এদিন দুপুর ১২টা ৫০ মিনিটে মিছিলটি উত্তরা পূর্ব থানাধীন আজমপুর এলাকায় পৌঁছালে আসামিদের ছোঁড়া গুলি তার বাম কাঁধে লাগলে তাৎক্ষণিক মাটিতে লুটিয়ে পড়েন। হাসপাতালে চিকিৎসা শেষে সুস্থ হন তিনি।
পরে গত ২২ আগস্ট ১১ জনকে এজাহারনামীয় ও অজ্ঞাতনামা ১৫০ থেকে ২০০ জনকে আসামি করে উত্তরা পূর্ব থানায় মামলা দায়ের করেন ভুক্তভোগী জুবায়ের হাসান ইউসুফ।

























