কুমিল্লার দেবিদ্বার উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের ভোট গ্রহণ চলছে। ভোটগ্রহণের শুরুতেই প্রায় শতাধিক ভোটকেন্দ্র থেকে ঘোড়া প্রতিকের চেয়ারম্য্যান প্রার্থী শাহিদা আক্তার ও দোয়াত-কলম প্রতিকের চেয়ারম্য্যান প্রার্থী খাদিজা বিনতে রোশনের এজেন্টকে বের করে দেয়া হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। স্থানীয় সংসদ সদস্য আবুল কালাম আজাদের ছোট ভাই আনারস প্রতিকের চেয়ারম্যান প্রার্থী মামুনুর রশীদের লোকজন বিভিন্ন ভোটকেন্দ্র থেকে মারধর করে প্রভাব খাটিয়ে অন্য দুই চেয়ারম্যান প্রার্থীর এজেন্টদের বের করে দিয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে।

সকাল ১০ টায় পৌর এলাকার সুজাত আলী সরকারি কলেজের ভোট কেন্দ্রে গিয়ে দোয়াত-কলম প্রতিকের চেয়ারম্য্যান প্রার্থী খাদিজা বিনতে রোশন তার এজেন্টকে কেন বের করে দেয়া হয়েছে এর প্রতিবাদ জানালে আওয়ামী লীগ নেতা সহ আরো কয়েকজন প্রার্থীর উপর হামলা করে কেন্দ্র থেকে বের করে দেন।
স্থানীয় একাধিক সূত্র ও বিভিন্ন প্রার্থীর লোকজন জানান, উপজেলার বরকামতা ইউনিয়ন, সুুলতানপুর ইউনিয়ন, ভানী ইউনিয়ন, রাজামেহের ইউনিয়ন, মোহনপুর ইউনিয়ন , সুুবিল ইউনিয়ন, ফতেহাবাদসহ পৌর এলাকার সিংহভাগ ভোটকেন্দ্র থেকে এজেন্ট বের করে দেয়া হয়েছে। ঘোড়া প্রতিকের চেয়ারম্য্যান প্রার্থী শাহিদা আক্তার ও দোয়াত-কলম প্রতিকের চেয়ারম্যান প্রার্থী খাদিজা বিনতে রোশনের এজেন্টকে বের করে দেয়া হয়েছে বলে তাঁরা অভিযোগ করে। ওইসব কেন্দ্র গুলোতে অবাধে আনারস প্রতিকের লোকজন জালভোট প্রদান করছে বলে জানান ঘোড়ার প্রতিকের লোকজন । কয়েকটি কেন্দ্রে জালভোট প্রদানকালে কয়েকজন হাতেনাতে আটক করা হয়েছে।
ধামতী ইউনিয়নের সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে বেলা পৌণে ১১ টায় আনারস প্রতিকের পক্ষে জালভোট দেয়ার সময় দুইজন আটক হয়েছে।
মোহনপুর ইউনিয়নের ছোটনা মডেল উচ্চ বিদ্যালয়ের ভোটকেন্দ্রে গিয়ে বিভিন্ন বুুথে ব্যালট পেপারে আগে থেকে আনারসের পক্ষে সিল মারা পাওয়া গেছে। পরে মিডিয়া কর্মীরা তা দেখে ফেললে ভোটটি বাতিল করা হয়। এমন চিত্র প্রায় সব কেন্দ্রেই।
এ বিষয়ে ঘোড়া প্রতিকের চেয়ারম্যান প্রার্থী শাহিদা আক্তার জানান, গত ৫/৬ দিন ধরে আমার এজেন্ট, নেতাকর্মী ও ভোটারদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে অস্ত্রের মুুখে হুমকি দিয়েছে চেয়ারম্যান প্রার্থী মামুন এর সন্ত্রাসী বাহিনী। আমরা অনেকবার জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা, পুলিশ প্রশাসনকে অবহিত করেছি। আজ ভোটের দিনও একই অবস্থা । প্রায় শতাধিক কেন্দ্র থেকে আমার এজেন্ট বের করে দেয়া হয়েছে। ৬টি ইউনিয়ন দখল করে নিয়েছে তাদের লোকজন। প্রচুর জালভোট মারছে তারা। আজকে নির্বাচনে দায়িত্বপ্রাপ্ত বেশিরভাগ প্রিসাইডিং অফিসার তাদের আত্মীয়, প্রতিষ্ঠানের কর্মচারি ও সুবিধেভোগি। তাদের প্রত্যক্ষ সহযোগিতায় ভোটকেন্দ্রগুলো দখল করে নিয়েছে তাদের লোকজন। জালভোট প্রদানের কয়েকটি ভিডিও ফুটেজও ভাইরাল হয়েছে। আমরা হতাশ। সুষ্ঠু নির্বাচনের কোন পরিবেশ নেই। নানা অনিয়মের জন্য অন্তত বরকামতা ইউনিয়ন, সুুলতানপুর ইউনিয়ন, ভানী ইউনিয়ন, রাজামেহের ইউনিয়ন, মোহনপুর ইউনিয়ন , সুুবিল ইউনিয়ন, ফতেহাবাদসহ ৭টি ইউনিয়নের ভোটগ্রহণ বন্ধ রাখার জন্য নির্বাচন কমিশনের হস্তক্ষেপ কামনা করছি।
এ বিষয়ে দোয়াত-কলম প্রতিকের চেয়ারম্যান প্রার্থী খাদিজা বিনতে রোশন জানান, আমার এজেন্ট কেন বের করে দেয়া হয়েছে, তার প্রতিবাদ করায় আমারকে মারধর করে বের করে দিয়েছে তাদের লোকজন।
এ বিষয়ে সিনিয়র জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মনির হোসাইন জানান, কয়েকটি জালভোটের ভিডিও আমরা পেয়েছি। যখনই অভিযোগ পাচ্ছি ম্যাজিষ্ট্রেট ঘটনাস্থলে যাচ্ছে। আমরা চেষ্টা করছি সুষ্ঠু ভোটের জন্য।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে চেয়ারম্যান প্রার্থী মামুনুুর রশীদের মুঠোফোনে কল দিলে মুঠোফোন সংযোগে তাদের পাওয়া যায়নি।
উল্লেখ্য যে, দেবিদ্বার উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে ১২৩টি ভোটকেন্দ্রে মোট ভোটার ৩ লাখ ৮১ হাজার ৮৫৭ জন।