শুক্রবার (২৮ মার্চ) দিনের মাঝামাঝিতে দক্ষিণপূর্ব এশিয়ার দেশটির মধ্যাঞ্চলের সাগেইং শহরে সাত দশমিক সাত মাত্রার একটি ভূমিকম্প হয়েছে। পরবর্তীকে বেশ কয়েকটি আফটারশক (পরাঘাত) হয়েছে। এরমধ্যে একটি আফটারশকের মাত্রা ছিল ছয় দশমিক সাত মাত্রার।-খবর ডনের।
প্রতিবেশী দেশ থাইল্যান্ডও কেঁপে ওঠে ভূমিকম্পে। দেশটিতে ১০ জনের নিহতের খবর নিশ্চিত করা হয়েছে।
ভূমিকম্পে মিয়ানমারের বহু ভবন ও সেতু ভেঙে পড়েছে। রাস্তায় ফাটল ধরে চৌচির হয়ে গেছে। ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয় মিয়ানমারের দ্বিতীয় বৃহত্তর শহর মান্দালয়। শহরটিতে এক কোটি ৭০ মানুষ বাস করেন।
জান্তা সরকারের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ভূমিকম্পে তিন হাজার ৪০৮ জন আহত হয়েছেন। নিখোঁজ রয়েছেন অন্তত ১৩৯ জন।
গেল একশ বছরের মধ্যে সবচেয়ে ভয়াবহ এই ভূমিকম্পে মিয়ানমারের যোগাযোগ ব্যবস্থা ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এতে ধ্বংসযজ্ঞের মাত্রা এখনো পুরোপুরি পরিষ্কার হওয়া সম্ভব হয়নি। নিহতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
দেশটিতে কয়েক শত বছরের পুরোনো একটি প্যাগোডা মাটিতে মিশে গেছে। প্যাগোডার পাশেই তল্লাশিচৌকিতে দাঁড়িয়ে থাকা এক সেনা বলেন, ‘হঠাৎ করে কম্পন শুরু হয়েছে। পরে তা মারাত্মক রূপ নিয়েছে। মঠও ভেঙে গেছে। একজন সন্ন্যাসী নিহত হয়েছেন। কয়েকজনকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।’
দীর্ঘদিন ধরে রক্তক্ষয়ী গৃহযুদ্ধকবলিত দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশটিতে ব্যাপক মানবিক সংকট দেখা দিয়েছে। ভূমিকম্পের ফলে সড়ক ও সেতু ভেঙে পড়ায় চলাচলও কঠিন হয়ে পড়েছে। এতে ত্রাণ কার্যক্রম চালানো যাচ্ছে না।
শুক্রবার আন্তর্জাতিক সহায়তার জন্য আহ্বান জানিয়েছেন জান্তাপ্রধান মিন অং হ্লায়াং। যা একেবারে বিরল ঘটনা। এতে বোঝা যায় দেশটিতে বিপর্যয়ের পরিমাণ কতটা মারাত্মক রূপ নিয়েছে।
এরআগে বহু প্রাকৃতিক বিপর্যয় হলেও বিদেশি সহায়তা চাওয়া থেকে বিরত থাকতে দেখা গেছে মিয়ানমারের সামারিক সরকারকে। ভূমিকম্পের সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত ছয়টি অঞ্চলে জরুরি অবস্থা ঘোষণা করা হয়েছে।
রাজধানীর নেপিদোর একটি বড় হাসপাতালে খোলা আকাশের নিচে আহতদের চিকিৎসা দিতে বাধ্য হয়েছেন চিকিৎসকরা। এরআগে কখনো এত প্রাণহানি দেখেননি বলে জানান একজন চিকিৎসক। তিনি বলেন, ‘আমরা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করছি। আমরা খুবই অসহায়।’-ইউএনবি