ভ্যাকসিন না পেয়ে রাজধানীর পান্থপথ এলাকায় সড়ক অবরোধ করে আন্দোলন করছেন সৌদি আবরসহ মধ্যপ্রাচ্যগামী প্রবাসীরা। প্রবাসীদের আন্দোলনের কারণে পান্থপথ এলাকায় যান চলাচল ব্যাহত হচ্ছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে ঘটনাস্থলে ডিএমপির তেজগাঁও বিভাগের পুলিশ সদস্যরা উপস্থিত আছেন।
মঙ্গলবার (২১ জানুয়ারি) সকাল সাড়ে ১০টার পর থেকে প্রায় ৩০০ জন প্রবাসী পান্থপথে অবস্থিত স্কয়ার হাসপাতালের সামনে এই আন্দোলন করছেন।
পুলিশ সূত্রে জানা যায়, আন্দোলনরত প্রবাসীদের মধ্যে অধিকাংশ সৌদি প্রবাসী। এছাড়া ওমরা হজের যাত্রীরাও রয়েছেন। তাদের আজ রাজধানীর বিভিন্ন হাসপাতালে সৌদি আবরসহ মধ্যপ্রাচ্যের আরো দুই-একটি দেশে যাওয়ার জন্য ভ্যাকসিন নেওয়ার কথা ছিল। কিন্তু ওইসব হাসপাতালে গিয়ে তারা দেখেন তাদের যেসব ভ্যাকসিন দেওয়ার কথা ছিল সেসব ভ্যাকসিন নেই। পরে তাদের জানানো হয় পান্থপথের স্কয়ার হাসপাতালে ভ্যাকসিন আছে সেখানে যেতে। সে অনুযায়ী তারা স্কয়ার হাসপাতালে আসেন। কিন্তু এসে দেখেন এখানেও ভ্যাকসিনের সংকট। এরপর ভ্যাকসিন না পেয়ে প্রবাসীরা ক্ষুব্ধ হয়ে রাস্তায় নেমে আন্দোলন করতে থাকেন।
এ বিষয়ে তেজগাঁও থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মো. জুবায়ের বলেন, ভ্যাকসিন না পেয়ে ক্ষুব্ধ প্রবাসীরা সড়ক অবরোধ করেছেন। তাদেরকে বিভিন্ন হাসপাতাল থেকে বলা হয়েছে যে, স্কয়ার হাসপাতালে গেলে তারা ভ্যাকসিন পাবেন। কিন্তু স্কয়ার হাসপাতালে থেকে প্রতিদিন ১০ থেকে ১৫টি ভ্যাকসিন দেওয়া হয়। তাদের কাছে তো এত ভ্যাকসিনর স্টক নেই। প্রায় ৩০০ জন লোক এসেছেন ভ্যাকসিন নিতে। তাদের অধিকাংশ সৌদি প্রবাসী। আবার অনেকে রয়েছেন ওমরা হজের যাত্রী। এর বাইরে মধ্যপ্রাচ্যের আরো দুই-একটি দেশের প্রবাসীরা রয়েছেন।
স্কয়ার হাসপাতালের সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট ডা. ফয়সাল জামান বলেন, সকাল সাড়ে আটটা থেকে আমাদের হাসপাতালের সামনে ভ্যাকসিনর জন্য প্রবাসীরা এসে বসে আছেন। এই মুহূর্তে আমাদের কাছে কোনো ভ্যাকসিন নেই। যা ছিল গতকাল পর্যন্ত আমরা দিয়েছি। এই ভ্যাকসিন বাংলাদেশে আমদানি করে রেডিয়েন্ট ফার্মা, তাদের সঙ্গে আমরা যোগাযোগ করেছি তারা বলছে নতুন করে ভ্যাকসিন আনতে অন্তত ১০-১৫ দিন লাগবে। এই মুহূর্তে তো আমাদের কিছুই করার নেই।
তিনি বলেন, এর আগে প্রতিদিন সর্বোচ্চ পাঁচ থেকে ছয়টা ভ্যাকসিন লাগতো। হুটহাট করেই সৌদি সরকারের কী সিদ্ধান্ত হলো, এখন এসে হাজারো মানুষ হাসপাতালের সামনে ভিড় জমিয়েছে। এর মধ্যে আবার অন্যান্য কয়েকটি হাসপাতালও তাদের কাছে ভ্যাকসিন নিতে যাওয়া লোকদের আমাদের হাসপাতালে পাঠিয়ে দিচ্ছে। আমরা তো এই অবস্থার জন্য প্রস্তুত ছিলাম না। এটি একটি স্লো মুভিং ভ্যাকসিন। অর্ডার দেওয়ার পরও বেশ সময় নিয়ে আসে। আমরা একাধিকবার রেডিয়েন্ট ফার্মাকে অনুরোধ করেছি কিছু করার জন্য কিন্তু তারা বলছে পারবে না।
আমাদের স্পষ্ট বক্তব্য হলো, আমরা চাইলেই এই মুহূর্তে ভ্যাকসিন আনতে পারব না। এখন সরকার যদি ব্যবস্থা করতে পারে, তাহলে বিষয়টি তাদের দেখার অনুরোধ।
এর আগে সোমবার (২০ জানুয়ারি) হজ ও ওমরাহ যাত্রীদের জন্য মেনিনজাইটিসের ভ্যাকসিন বাধ্যতামূলক বিষয়ে নতুন নির্দেশনা দিয়েছে রাজধানীর হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর। সৌদি আরব সরকারের নতুন নির্দেশনার আলোকে এ নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। ভ্যাকসিনর এ নির্দেশনা কার্যকর হবে আগামী ১০ ফেব্রুয়ারি থেকে।
বিমানবন্দরের নির্বাহী পরিচালক কামরুল ইসলাম দেশের সব এয়ারলাইন্স ও বিমানবন্দর সংশ্লিষ্ট সব পক্ষকে নির্দেশনার বিষয়ে চিঠি দিয়েছেন।