ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) আবু সাঈদ মো. কামরুজ্জামানকে র সরিয়ে তাকে হাওর ও জলাভূমি উন্নয়ন অধিদপ্তরের মহাপরিচালক হিসেবে বদলি করা হয়। গত ১৮ ফেব্রুয়ারি তিনি ডিএনসিসির সিইও’র দায়িত্ব গ্রহণ করেছিলেন।
সোমবার (২৬ মে) জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় থেকে জারি করা প্রজ্ঞাপনে তথ্যটি নিশ্চিত করা হয়। এর ফলে কামরুজ্জামান মাত্র তিন মাস আট দিন উত্তর সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তার দায়িত্ব পালন করেছেন।
এর আগে গত এপ্রিলে একই দিনে পৃথক দুটি আদেশে ডিএনসিসির প্রধান সম্পত্তি কর্মকর্তা মো. নুরুজ্জামান ও প্রধান রাজস্ব কর্মকর্তা মো. মনিরুজ্জামানকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছিল। গত ১৬ এপ্রিলের ওই আদেশে মো. নুরুজ্জামানকে বিমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষের পরিচালক এবং মো. মনিরুজ্জামানকে শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের উপ-সচিব হিসেবে পদায়ন করা হয়েছিল।
ডিএনসিসি সূত্রে জানা গেছে, গত ফেব্রুয়ারি মাসে দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকেই সংস্থাটির প্রশাসক মোহাম্মদ এজাজের সঙ্গে সিইও কামরুজ্জামানের করপোরেশনের বিভিন্ন বিষয়ের সিদ্ধান্ত নিয়ে মতানৈক্য চলছিল।
করপোরেশনের একমাত্র স্থায়ী হাট গাবতলী পশুর হাটের ইজারা দেওয়া নিয়েও প্রশাসকের সঙ্গে প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তার মতবিরোধ তৈরি হয়। হয়তো মতানৈক্যের কারণে হঠাৎ তাকে বদলি করা হয়ে থাকতে পারে। এই হাটের ইজারা নিয়ে সাবেক প্রধান সম্পত্তি কর্মকর্তা মো. নুরুজ্জামানের সঙ্গেও প্রশাসকের মতবিরোধ হয়।
যদিও বদলি ও প্রশাসকের সঙ্গে দ্বন্দ্বের বিষয়টি নিয়ে কোনো মন্তব্য করতে চাননি ডিএনসিসির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা আবু সাঈদ মো. কামরুজ্জামান। তিনি সাংবাদিকদের বলেন, আমি সরকারের একজন আজ্ঞাবহ কর্মচারী। সরকার যেখানে আমাকে পদায়ন করবে, আমি সেখানে যেতে বাধ্য। সিটি করপোরেশন ভালো চলুক, এটাই আমি চাই।
প্রধান রাজস্ব কর্মকর্তা মো. মনিরুজ্জামানের সঙ্গে প্রশাসকের দ্বন্দ্ব হয়েছিল মোহাম্মদপুরের কৃষি মার্কেটের জায়গায় অবৈধভাবে তৈরি হওয়া মার্কেট ভবন উচ্ছেদের উদ্যোগ নেওয়া নিয়ে। গৃহকর (হোল্ডিং ট্যাক্স) স্বয়ংক্রিয় করার সিদ্ধান্ত নিয়েও বিরোধিতা করেছিলেন প্রধান রাজস্ব কর্মকর্তা।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এসব কারণে প্রশাসকের সঙ্গে ডিএনসিসির বিভিন্ন বিভাগের দায়িত্বে থাকা প্রশাসন ক্যাডারের কর্মকর্তাদের মধ্যে দূরত্ব দিন দিন বাড়ছে। প্রশাসকের প্রতি কর্মকর্তাদের অসন্তোষও তৈরি হচ্ছে, যার প্রভাব পড়ছে দাপ্তরিক কার্যক্রমে। সর্বশেষ সিইও কামরুজ্জামানের হঠাৎ বদলিতে এর প্রভাব আরও প্রকট হতে পারে।