একুশে পদক প্রাপ্ত অভিনেতা জামালউদ্দিন হোসেন কানাডায় মারা গেছেন (ইন্নালিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। তার বয়স হয়েছিল ৮১ বছর। একসময় টেলিভিশন ও মঞ্চনাটকে নিয়মিত অভিনয় করতেন তিনি।
পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, শুক্রবার কানাডার ক্যালগ্যারিতে স্থানীয় সময় সন্ধ্যা ৬টায় মারা গেছেন জামালউদ্দিন হোসেন। ক্যালগ্যারিতেই আজ বাদ জোহর তার মরদেহ দাফন করা হয়। তিনি স্ত্রী, এক ছেলে ও এক মেয়ে রেখে গেছেন।
১৯৪৩ সালের ৮ অক্টোবর ভারতের চব্বিশ পরগনায় জন্মগ্রহণ করেন জামালউদ্দিন হোসেন। ১৯৪৭ সালে দেশভাগের সময় পরিবারের সঙ্গে চট্টগ্রামে চলে আসেন তিনি। চট্টগ্রামে স্কুল-কলেজ পেরিয়ে বুয়েটে ভর্তি হন। ১৯৬৫ সালে বুয়েটের শিক্ষাজীবন শেষে চট্টগ্রাম স্টিল মিলসে মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে চাকরি শুরু করেন। এরপর অভিনয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়েন।
সত্তরের দশকের মাঝামাঝি মঞ্চনাটকে অভিনয় শুরু করেন জামালউদ্দিন হোসেন। ১৯৭৫ সাল থেকে ১৯৯৫ সাল পর্যন্ত নাগরিক নাট্য সম্প্রদায়ের সদস্য ছিলেন তিনি। ১৯৯৭ সালে তার পৃথক নাট্যদল নাগরিক নাট্যাঙ্গন অনসাম্বল যাত্রা শুরু করে। অভিনয়ের পাশাপাশি মঞ্চে কয়েকটি নাটক নির্দেশনা দিয়েছেন তিনি। এরমধ্যে উল্লেখযোগ্য ‘খাঁচার ভিতর অচিন পাখি’, ‘রাজা রানী’, ‘চাঁদ বণিকের পালা’, ‘আমি নই’, ‘বিবি সাহেব’, ‘যুগলবন্দী’।
মঞ্চের গণ্ডি পেরিয়ে টিভি নাটক ও চলচ্চিত্রে অভিনয় করেছেন জামালউদ্দিন হোসেন। ২০১৩ সালে একুশে পদকে ভূষিত হন তিনি। তার স্ত্রী রওশন আরা হোসেন গুণী অভিনেত্রী। ১৯৬৫ সালে তারা বিয়ে করেন। এই দম্পতিকে একসঙ্গে অনেক নাটকে দেখা গেছে। ২০১৮ সালে আন্তর্জাতিক বাংলা উৎসব ও মুক্তধারার বইমেলায় তারা যৌথভাবে ‘বেলাশেষে’ নামের একটি নাটকে অভিনয় করেন।
জামালউদ্দিন হোসেন ও রওশন আরা হোসেনের ছেলে তাশফিন হোসেন তপু নাগরিক নাট্যঙ্গন অনাসম্বলের নাট্যকর্মী ও অভিনেতা ছিলেন। কানাডার মাউন্ট রয়েল বিশ্ববিদ্যালয়ের ফাইন্যান্স বিভাগের অধ্যাপনার পাশাপাশি ক্যালগেরির মুক্ত বিহঙ্গ থিয়েটারের হয়ে কাজ করছেন তিনি।