রাজধানীর তেজগাঁও কলেজ ছাত্রাবাসে মাদক সেবন ও নিয়ন্ত্রণ নিয়ে ছাত্রদলের দুই গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষে তিন শিক্ষার্থী গুরুতর আহত হয়েছেন। শনিবার ( ৬ ডিসেম্বর) রাতে সংঘর্ষের পর আহতদের সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে উচ্চমাধ্যমিকের শিক্ষার্থী সাকিবুল হাসান রানাকে আইসিইউতে রাখা হয়েছে। তার অবস্থা আশঙ্কাজনক।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, ছাত্রদলের মোর্শেদ তরুণ–সেলিম গ্রুপ আর সুইডেন আসলাম গ্রুপ ছাত্রাবাসে দীর্ঘদিন ধরে মাদক সেবন, বহিরাগত রাখা ও চাঁদাবাজি নিয়ে বিরোধে জড়িত। শনিবার রাতে মাদক সেবন নিয়ে কথা কাটাকাটির পর দুই পক্ষের মধ্যে প্রায় চার থেকে ছয় ঘণ্টা ধরে সংঘর্ষ চলে।
আহত তিনজন হলেন সাকিবুল হাসান রানা (বিজ্ঞান বিভাগ, সেশন ২০২৪–২৫), হৃদয় আহমেদ (মানবিক বিভাগ, সেশন ২০২৪–২৫) এবং আইডিয়াল কলেজের শিক্ষার্থী জান্নাত (মানবিক বিভাগ, সেশন ২০২৫–২৬)। অভিযোগ রয়েছে, জান্নাত ছাত্রদলের প্রভাবশালী একটি গ্রুপের সহায়তায় তেজগাঁও কলেজ ছাত্রাবাসে অবস্থান করতেন।
হলের শিক্ষার্থীরা জানান, ছাত্রদলের দুই গ্রুপের আধিপত্য বিস্তার, মাদক সেবন-বেচাকেনা, বহিরাগত রাখা এবং চাঁদা আদায়কে কেন্দ্র করে দীর্ঘদিন ধরে অস্বস্তিকর পরিবেশ তৈরি হয়েছে। এতে সাধারণ শিক্ষার্থীরা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন এবং অনেক সময় প্রকৃত শিক্ষার্থীরা আবাসন সুবিধা থেকেও বঞ্চিত হন।
ছাত্রদলের কর্মী আব্দুর রহমান হিল রাফি বলেন, সাধারণ শিক্ষার্থীরা মাদক সেবনে বাধা দিলে তাদের ওপর হামলা করা হয়েছে। তিনি ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত ও দোষীদের শাস্তি দাবি করেন।
এক শিক্ষার্থী নাজমুল ইসলাম নিলয় অভিযোগ করেন, সভাপতি তরুণের সমর্থকেরা মাদক সেবনে বাধা দিলে হামলা চালায়। সংঘর্ষে কয়েকজন গুরুতর আহত হয়েছেন, দু’জনের খোঁজও মিলছে না।
হলের সাধারণ শিক্ষার্থীরা আরও দাবি করেন, তরুণ–সেলিম গ্রুপের মোমেন পালোয়ান নামের একজন অতীতে অন্য ছাত্রসংগঠনের রাজনীতিতে জড়িত ছিলেন। বর্তমানে তিনি প্রভাব খাটিয়ে ছাত্রাবাসে আধিপত্য স্থাপন এবং মাদক সংশ্লিষ্ট কর্মকাণ্ড চালাচ্ছেন।
সংঘর্ষের পর পুলিশ রাতেই ছাত্রাবাসে অভিযান চালিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে এবং ভোর পর্যন্ত অবস্থান করে। পুরো ক্যাম্পাসে আতঙ্ক ছড়িয়ে আছে।