নিউইয়র্কের নবনির্বাচিত মেয়র জোহরান মামদানি সিটি হলে দায়িত্ব গ্রহণের প্রস্তুতির অংশ হিসেবে ১৭টি ট্রানজিশন কমিটিতে ৪০০ সদস্য নিয়োগ দিয়েছেন। এ কমিটিগুলোতে এবার নজর কাড়ছে বাংলাদেশিদের উল্লেখযোগ্য উপস্থিতি। এরইমধ্যে মোট ১২ জন বাংলাদেশি এই ট্রানজিশন টিমে অন্তর্ভুক্ত হয়েছেন, যা অভিবাসী কমিউনিটির জন্য বিশেষ গৌরবের বলে মনে করছেন স্বদেশিরা।
নিশ্চিত হওয়া ৯ জন বাংলাদেশি হলেন
- শামসুল হক, নিউইয়র্ক পুলিশের সদ্য সাবেক লেফটেন্যান্ট কমান্ডার;
- শাহরিয়ার রহমান, মানবিক সংগঠন ‘ভালো’র নির্বাহী প্রধান;
- আব্দুল আজিজ ভূঁইয়া, জনসংগঠক;
- মোহাম্মদ করিম চৌধুরী, জনসংগঠক;
- কাজী ফৌজিয়া, নাগরিক আন্দোলনের নেত্রী;
- ফারিহা আক্তার, আরমান চৌধুরী, তাজিন আজাদ ও সামতলী হক।
বাকী তিনজন সিটি ইউনিভার্সিটি অব নিউইয়র্কের (কিউনি) তিনজন শিক্ষক রয়েছেন বলে একাধিক সূত্র নিশ্চিত করেছে।
বাংলাদেশিদের মতে, নিউইয়র্কের রাজনীতিতে দীর্ঘদিনের সংগ্রামের পর এ অন্তর্ভুক্তি নতুন সম্ভাবনার দরজা খুলে দেবে। “এতদিন আমরা সমস্যার কথা বলেছি, এবার সমাধানের দায়িত্বও আমাদের”—এমন মন্তব্য করছেন কমিউনিটির নেতৃবৃন্দ।
১৭টি ট্রানজিশন কমিটি—দুটি একেবারেই নতুন
আবাসন, পরিবহন, কমিউনিটি সেফটি, অর্থনৈতিক উন্নয়নসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ খাত নিয়ে কাজ করবে এই কমিটিগুলো। পাশাপাশি ওয়ার্কার জাস্টিস ও কমিউনিটি অর্গানাইজিং নামে দুটি নতুন কমিটি যোগ করেছেন মেয়র মামদানি—যা নিউইয়র্ক সিটির ইতিহাসে প্রথম। শ্রমিক অধিকার নিয়ে কাজ করা নিউইয়র্ক ট্যাক্সি ওয়ার্কার্স অ্যালায়েন্সের ভৈরবী দেশাই ওয়ার্কার জাস্টিস কমিটির নেতৃত্ব দিচ্ছেন।
কাজী ফৌজিয়া বলেন, “বাংলাদেশিরা খুশি হয়েছেন দেখে ভালো লাগছে। তবে লক্ষ্য অর্জনে একজন কর্মী হিসেবে সক্রিয় ভূমিকা রাখাই বড় দায়িত্ব।”
শামসুল হক বলেন, “নিজের অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে নিউইয়র্কবাসীর জীবনমান উন্নয়নে ভূমিকা রাখতে পারা আমার জন্য সম্মানের।”
সোমবারের এই কমিটি ঘোষণাটি আসে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে মামদানির আলোচিত হোয়াইট হাউস বৈঠকের কয়েক দিনের ব্যবধানে। প্রায় ২৫ মিনিটের বৈঠকের পর দুই নেতা যৌথ সংবাদ সম্মেলনে বেশ সৌহার্দ্যপূর্ণভাবে বক্তব্য দেন—যা সাম্প্রতিক মাসগুলোর মুখোমুখি সমালোচনার তুলনায় ভিন্ন সুর।
মামদানি জানান, আলোচনায় প্রধানত নিউইয়র্কে সাশ্রয়ী জীবনযাপন ও জননিরাপত্তা নিয়ে কথা হয়েছে। ফেডারেল বাহিনী পাঠানো প্রসঙ্গে ট্রাম্প বলেছেন, “নিউইয়র্কের চেয়ে অন্য জায়গায় বেশি প্রয়োজন।”
মেয়র-ইলেক্ট মামদানি বলেন, “আমাদের লক্ষ্য জননিরাপত্তা নিশ্চিত করা এবং সেটা বাস্তবায়ন করবে এনওয়াইপিডি।”
৪০০ সদস্যের তালিকায় বাংলাদেশিদের পাশাপাশি রয়েছেন—১১ জন পাকিস্তানি, ১৬ জন ভারতীয়। দক্ষিণ এশীয়দের মধ্যে রয়েছে ১০ জন পাঞ্জাবি ও ৪ জন ইন্ডো-কারিবিয়ানও।
২৪ নভেম্বর অনুষ্ঠিত প্রথম সভায় মামদানি ও সমস্ত সদস্য উপস্থিত ছিলেন। বিভিন্ন কমিটি তাদের নিজ নিজ খাতে নতুন নীতি, কৌশল ও সম্ভাব্য নিয়োগ বিষয়ে সুপারিশ করবে। নির্বাচনের এক মাসেরও কম সময়ে এই টিম ইতোমধ্যে ৭০ হাজারের বেশি রেজুমি পেয়েছে।
বাংলাদেশি কমিউনিটি বলছে—এটি শুধু সম্মানই নয়, ভবিষ্যতের পথে বাস্তব অবদান রাখার বড় সুযোগ।-নিউজ২৪