রাজকীয় জাঁকজমকের মধ্য দিয়ে বুধবার যুক্তরাজ্যে শুরু হলো যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের দ্বিতীয় রাষ্ট্রীয় সফর। উইন্ডসর ক্যাসেলে তাকে স্বাগত জানান রাজা চার্লস, রানি ক্যামিলা, যুবরাজ উইলিয়াম ও কেট। এসময় যুক্তরাজ্য-মার্কিন বিশেষ সম্পর্কের প্রশংসা করেন রাজা চালর্স এবং ট্রাম্প।
ইতিহাসে কোনো রাষ্ট্রপ্রধানকে দেওয়া সবচেয়ে বড় আনুষ্ঠানিক অভ্যর্থনা হিসেবে এটাকে বর্ণনা করছে লন্ডন। ব্রিটিশ রাজপ্রাসাদ উইন্ডসর ক্যাসলে পৌঁছালে লালগালিচা সংবর্ধনা, তোপধ্বনি ও অশ্বারোহী বাহিনীর প্রদর্শনীর মতো রাজকীয় আড়ম্বরের মধ্য দিয়ে সস্ত্রীক ট্রাম্পকে স্বাগত জানায় রাজপরিবার।
প্রাসাদে ট্রাম্প যখন রাজার সঙ্গে করমর্দন করছিলেন, তখন প্রথম বিশ্বযুদ্ধের সময়ের ছয়টি কামান থেকে ৪১ বার তোপধ্বনি করা হয়। একই সময়ে টাওয়ার অব লন্ডন থেকেও একই রকম তোপধ্বনি হয়। ট্রাম্প দম্পতিকে স্বাগত জানানোর এ আয়োজনে অংশ নেন ব্রিটিশ সামরিক বাহিনীর ১,৩০০ সদস্য। ছিল প্রায় ১২০টি ঘোড়া।
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সস্ত্রীক যুক্তরাজ্য সফর উপলক্ষে এখানে রাজকীয় নৈশভোজের আয়োজন করেন রাজা তৃতীয় চার্লস ও রানি ক্যামিলা। রাতের রাজকীয় এ আয়োজনে কূটনীতি, খাবার, ঐতিহ্য, সংগীত আর আভিজাত্য একসুতোয় বাঁধা পড়েছিল। ট্রাম্প–মেলানিয়াসহ রাজার অতিথি হয়েছিলেন বিশ্বের ১৬০ জন গণ্যমান্য ব্যক্তি। এসময় ট্রাম্প দুই দেশের চিরন্তন আন্ত সম্পর্কের প্রশংসা করেন।
ট্রাম্প বলেন, এটি আমার এখানে দ্বিতীয় রাষ্ট্রীয় সফর সম্ভবত এটিই শেষবার হতে চলেছে। এটা অবশ্যই আমার জীবনের সর্বোচ্চ সম্মানের একটি বিষয়। আপনার প্রতি এবং আপনার দেশের প্রতি শ্রদ্ধা জানাচ্ছি। এই রাজ্যের আইন, সাংস্কৃতিক এবং রাজনৈতিক ঐতিহ্য মানবজাতির সর্বোচ্চ অর্জনগুলোর মধ্যে একটি।
এদিকে ট্রাম্পকে সবচেয়ে ঘনিষ্ঠ মিত্র বলেছেন রাজা চার্লস। তিনি বলেন, আপনাদের সফর উপলক্ষে এই গুরুত্বপূর্ণ ক্ষণটি আমাদের দুটি মহান জাতির মধ্যে স্থায়ী বন্ধনকে আরও দৃঢ় করবে। অনেক দিক দিয়ে আমরা এখনো সবচেয়ে ঘনিষ্ঠ মিত্র।
ট্রাম্প রাজা চার্লসের সঙ্গে সেনাদের অভিবাদন গ্রহণ করেন এবং সেন্ট জর্জেস চ্যাপেল পরিদর্শন করেন। সেখানে তিনি প্রয়াত রানি এলিজাবেথের সমাধিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন। পরে যুক্তরাজ্য ও যুক্তরাষ্ট্রের যৌথ প্রতিরক্ষা সহযোগিতার প্রতীক হিসেবে উভয় দেশের এফ-৩৫ যুদ্ধবিমানের উড়ান প্রদর্শিত হয়।
এদিকে ট্রাম্পের সফরকে ঘিরে রাজকীয় আয়োজন থাকলেও রাস্তায় চলছে বিক্ষোভ। উইন্ডসর ও লন্ডনে শত শত মানুষ ট্রাম্পবিরোধী স্লোগান দেন। ট্রাম্পের এই সফরকে বলা হচ্ছে নজিরবিহীন। এর আগে কোনো মার্কিন প্রেসিডেন্ট দুবার রাষ্ট্রীয় সফরে যুক্তরাজ্যে যাননি। ২০১৯ সালে প্রথমবার রাষ্ট্রীয় সফরে সস্ত্রীক যুক্তরাজ্যে গিয়েছিলেন ট্রাম্প। সফর সফল হলে এটি রাজা চার্লসের রাজত্বকালের সবচেয়ে তাৎপর্যপূর্ণ ঘটনা হয়ে উঠবে।-একাত্তর