কুয়েতের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় আবাসন ও ভিসা–সংক্রান্ত সব সেবার ফি পুনর্নির্ধারণ করেছে। যার মধ্যে উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে বিভিন্ন ক্যাটাগরির নবায়ন ফি। পরিবারিক আবাসনের ক্ষেত্রে ন্যূনতম বেতনসীমা কেডি ৮০০ বহাল রাখা হয়েছে এবং স্ত্রী–সন্তান ব্যতীত অন্যান্য নির্ভরশীলদের স্পনসর ফি বছরে বাড়িয়ে কেডি ৩০০ করা হয়েছে।
রোববার (২৩ নভেম্বর) প্রকাশিত সরকারি গেজেটে নতুন আবাসন আইনের বিধিমালা এক মাস পর কার্যকর হবে। এতে ভিজিট ভিসা একবার সমপরিমাণ সময়ের জন্য নবায়ন, ভিজিট ভিসাকে রেসিডেন্সিতে রূপান্তর এবং নবজাতকের রেসিডেন্সি স্ট্যাম্প করার সময়সীমা চার মাস পর্যন্ত বাড়ানোর সুযোগ রাখা হয়েছে।
ভিজিট ভিসা ফি কেডি ১০
নতুন বিধিমালা অনুযায়ী, কর্ম, আবাসন বা পর্যটনসহ সব ধরনের ভিজিট ভিসার ফি সমানভাবে কেডি ১০ নির্ধারণ করা হয়েছে।
সাধারণ আবাসন নবায়ন ফি বছরে কেডি ২০
সরকারি, বেসরকারি, বিদেশি শিক্ষার্থী, ধর্মীয় কর্মীসহ অধিকাংশ ক্যাটাগরির রেসিডেন্সির নবায়ন ফি দ্বিগুণ করে বছরে কেডি ২০ করা হয়েছে। বিদেশি বিনিয়োগকারী ও রিয়েল এস্টেট মালিকদের (আর্টিকেল ১৯ ও ২১) জন্য এই ফি কেডি ৫০, আর স্ব-স্পন্সর রেসিডেন্সি (আর্টিকেল ২৪) প্রথমবারের মতো বছরে কেডি ৫০০ ধার্য করা হয়েছে।
নির্ভরশীলদের ফি
– স্ত্রী/স্বামী ও সন্তানদের জন্য ফি—কেডি ২০
– বিনিয়োগকারী, রিয়েল এস্টেট মালিক ও ধর্মীয় কর্মীদের নির্ভরশীল—কেডি ৪০
– স্ব-স্পন্সরের পরিবারের সদস্য—কেডি ১০০
– স্ত্রী–সন্তান ব্যতীত অন্য নির্ভরশীল (যেমন—পিতা-মাতা)—ফি বাড়িয়ে কেডি ৩০০
প্রাকৃতিকভাবে কুয়েতি নারী মাতৃসূত্রে নাগরিকত্বপ্রাপ্ত বিদেশি সন্তানদের জন্য বছরে কেডি ২০ ফি নির্ধারণ করা হয়েছে, আর জন্মসূত্রে নাগরিক কুয়েতি নারীর বিদেশি সন্তানদের কোনো ফি দিতে হবে না।
অস্থায়ী আবাসন
অস্থায়ী রেসিডেন্স (আর্টিকেল ১৪) ফি মাসে কেডি ১০ এবং গৃহকর্মীদের জন্য মাসে কেডি ৫। রেসিডেন্স বাতিল করে দেশে ফেরার প্রস্তুতি নেওয়া অভিবাসীদের ‘ডিপারচার পিরিয়ড’ হিসেবেও মাসে কেডি ১০ ধার্য করা হয়েছে।
গৃহকর্মী সংক্রান্ত ফি
– কুয়েতি পরিবার: প্রথম ৩ জন কর্মীর জন্য ফি বছরে কেডি ১০; অতিরিক্তদের জন্য পর্যায়ক্রমে কেডি ৫০, ১০০ ইত্যাদি
– প্রবাসী পরিবার: প্রথম কর্মীর ফি কেডি ৫০; অতিরিক্তদের জন্য কেডি ৪০০ ও এরপর কেডি ৫০০
– কূটনীতিকদের জন্য প্রথম কর্মীর ফি কেডি ১০; অতিরিক্তদের জন্য কেডি ১০০, ২০০ ইত্যাদি
গৃহকর্মীদের বয়সসীমা ২১–৬০ বছর নির্ধারণ করা হয়েছে।
রেসিডেন্সির মেয়াদ
– সাধারণ রেসিডেন্স: সর্বোচ্চ ৫ বছর
– কুয়েতি নারীর বিদেশি সন্তান/রিয়েল এস্টেট মালিক: সর্বোচ্চ ১০ বছর
– বিনিয়োগকারী: সর্বোচ্চ ১৫ বছর
রেসিডেন্স পেতে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের বীমা বাধ্যতামূলক।
ভিজিট ভিসা
বেশিরভাগ ভিজিট ভিসা তিন মাসের জন্য বৈধ থাকবে এবং সর্বোচ্চ এক বছর পর্যন্ত নবায়নযোগ্য হবে। মাল্টিপল এন্ট্রি ভিসা এক বছরের জন্য বৈধ, তবে প্রতিবার অবস্থান সীমা এক মাস।
সরকারি ভিজিট ভিসাধারী বিশ্ববিদ্যালয় স্নাতকদের, গৃহকর্মীদের, পরিবার ভিজিট ভিসাধারীদের এবং নির্ধারিত অন্যান্য ক্যাটাগরিকে রেসিডেন্সিতে রূপান্তরের সুযোগ রয়েছে।
পারিবারিক আবাসন (ডিপেনডেন্ট ভিসা)
প্রবাসীরা মাসে কেডি ৮০০ বেতনের শর্তে স্ত্রী/স্বামী ও সন্তানদের স্পনসর করতে পারবেন। তবে সরকারি গবেষক, বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক, সরকারি শিক্ষক, প্রকৌশলী, ইমাম, সাংবাদিক, সামরিক ও স্বাস্থ্য খাতের ফার্মাসিস্ট–নার্সসহ একাধিক পেশা এই বেতনসীমা থেকে অব্যাহতি পাবে।
কাজ না থাকলেও বৈধ আয়ের প্রমাণ দেখিয়ে রেসিডেন্সি পাওয়া সম্ভব, এবং সম্পত্তির মালিকরাও মালিকানার প্রমাণ দিলে রেসিডেন্সি পাবেন।
সূত্র: কুয়েত টাইমস