সম্প্রতি মধ্যপ্রাচ্য সফরের সময় সিরিয়ার উপর থেকে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ঘোষণা শুক্রবার থেকে কার্যকর করেছে ট্রাম্প প্রশাসন। যুক্তরাষ্ট্রের অর্থ মন্ত্রণালয় এক সাধারণ লাইসেন্স জারি করেছে, যার ফলে সিরিয়ার অন্তর্বর্তী সরকার, রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠান ও কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সঙ্গে আর্থিক লেনদেন করতে পারবে।
সিরিয়ার ওপর দীর্ঘদিনের মার্কিন নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের সিদ্ধান্তকে ‘স্বাগতযোগ্য পদক্ষেপ’ হিসেবে বর্ণনা করেছে দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
এর মাধ্যমে সিরিয়ার ওপর আরোপিত নিষেধাজ্ঞাগুলো শিথিল করা হয়েছে। এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, এই নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার নতুন বিনিয়োগ ও বেসরকারি খাতের কার্যক্রম চালু করতে সহায়তা করবে। এছাড়াও, পররাষ্ট্র সচিব মার্কো রুবিও ‘সিজার অ্যাক্ট’-এর অধীনে ১৮০ দিনের একটি ছাড়পত্র দিয়েছেন, যাতে মানবিক কার্যক্রম, বিদ্যুৎ, পানি, জ্বালানি ও স্যানিটেশন পরিষেবায় সিরিয়া কোনো বাধার সম্মুখীন না হয়।
সিরিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় একে একটি ‘ইতিবাচক পদক্ষেপ’ হিসেবে স্বাগত জানিয়েছে। তারা বলেছে, ‘সিরিয়া সব দেশের সঙ্গে পারস্পরিক সম্মান ও অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ না করার ভিত্তিতে সহযোগিতা করতে চায়।’
প্রসঙ্গত, ২০১১ সালে গৃহযুদ্ধ শুরুর পর যুক্তরাষ্ট্র সিরিয়ার তৎকালীন প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদের সরকার ও ঘনিষ্ঠদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে। কিন্তু ২০২৪ সালের ডিসেম্বরে আসাদ সরকার পতনের পর আহমেদ আল-শারার নেতৃত্বে একটি নতুন সরকার গঠিত হয়। ট্রাম্প গত সপ্তাহে সৌদি আরবে শারার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন এবং তার আগেই হঠাৎ করে সৌদি যুবরাজের অনুরোধে এই নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত নেন।
এই পদক্ষেপের ফলে সিরিয়ায় মানবিক সংস্থার কাজ সহজ হবে এবং বিদেশি বিনিয়োগের পথ খুলবে বলে আশা করা হচ্ছে। তবে যুক্তরাষ্ট্র সিরিয়ার ওপর বহু স্তরে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে, যা দেশটিকে আন্তর্জাতিক ব্যাংকিং ব্যবস্থা থেকে বিচ্ছিন্ন করে রেখেছে, এবং ভবিষ্যতে নিষেধাজ্ঞা ফিরে আসার আশঙ্কা বিনিয়োগকারীদের দ্বিধায় ফেলতে পারে।
সিরিয়া ১৯৭৯ সাল থেকেই যুক্তরাষ্ট্রের সন্ত্রাসবাদের পৃষ্ঠপোষক রাষ্ট্রের তালিকায় রয়েছে, এবং ২০১১ সালের পর একাধিকবার নতুন নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে।