বুধবার, ০৫ নভেম্বর ২০২৫, ০৪:৫৮ অপরাহ্ন
শিরোনাম :
শিরোনাম :
জয়, পুতুল ও ববিসহ ৮ জনের নামে মামলার অনুমোদন পুলিশের অভিযানে গ্রেপ্তার ১৭৪৮ জন ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গুতে ১০ জনের মৃত্যু ঢাকা জেলার আগ্নেয়াস্ত্র লাইসেন্সসমূহ ২০২৬ সালের জন্য নবায়নের সময় নির্ধারণ ‘বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ অধ্যাদেশ ২০২৫’ এর খসড়া প্রকাশ প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন যমুনা ও পার্শ্ববর্তী এলাকায় সভা-সমাবেশে নিষেধাজ্ঞা দিলো ডিএমপি নিউজার্সির প্রথম নারী গভর্নর নির্বাচিত হয়ে ইতিহাস গড়লেন শেরিল ভার্জিনিয়ার প্রথম নারী গভর্নর হয়ে ইতিহাস গড়লেন অ্যাবিগেল দুর্বল ৫ শরিয়াহভিত্তিক ব্যাংকের বোর্ড ভেঙে দিলো বাংলাদেশ ব্যাংক নিউইয়র্কের প্রথম মুসলিম মেয়র হলেন জোহরান মামদানি

ধানের শীষ-নৌকা-লাঙ্গল-দাঁড়িপাল্লা যেভাবে রাজনৈতিক দলের প্রতীক হয়ে উঠলো

নিউজ ডেস্ক | মেট্রোটাইমসটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট : সোমবার, ২০ অক্টোবর, ২০২৫, ৫:০৫ অপরাহ্ন
গুরুত্বপূর্ণ ৪টি রাজনৈতিক দলের নির্বাচনী প্রতীক। যদিও নৌকা প্রতীক এখন ইসির তালিকায় স্থগিত |বিবিসি

আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে রাজনৈতিক দলগুলোর প্রার্থীরা এরই মধ্যে নিজ নিজ দলের পক্ষে বিভিন্ন ধরনের প্রচার প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছে। নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা না হলেও নিজস্ব প্রতীকের সমর্থনে মিছিল-গণসংযোগ করতেও দেখা যাচ্ছে।

বিএনপি কিংবা জামায়াতে ইসলামীর মতো দলগুলো যখন ‘ধানের শীষ’ বা ‘দাঁড়িপাল্লা’ প্রতীকের পক্ষে মাঠের রাজনীতিতে সরব, তখন কার্যক্রম নিষিদ্ধ হওয়া আওয়ামী লীগের ‘নৌকা’ নেই ভোটের মাঠে। আর রাজনীতির নানা দোলাচলে ঝুলে আছে লাঙ্গল প্রতীকের নির্বাচনের ভবিষ্যৎ।

আবার, কাঙ্ক্ষিত প্রতীকের দাবিতে ভোটে যাওয়া, না যাওয়ার সিদ্ধান্তও আটকে আছে জাতীয় নাগরিক পার্টি বা এনসিপির মতো নতুন রাজনৈতিক দলের।

বাংলাদেশের নির্বাচনের ইতিহাস বলছে- ধানের শীষ, নৌকা, লাঙ্গল কিংবা দাঁড়িপাল্লার মতো প্রতীকগুলো ভোটের রাজনীতিতে বেশ গুরুত্বপূর্ণ অনুষঙ্গ হিসেবেই রয়ে গেছে বছরের পর বছর।

বিশ্লেষক মহিউদ্দিন আহমদ বিবিসি বাংলাকে বলেন, ‘ব্যালট পেপারে প্রার্থীর নামের পাশে থাকে প্রতীক। মানুষ প্রতীক দেখে ভোট দেয়। যে কারণে প্রতীক যদি পরিচিত হয়, তখন স্বাভাবিকভাবে সেই প্রতীক বা দলের জনপ্রিয়তাও থাকে আলাদা।’

যে কারণে নির্বাচনের আগে নিজ নিজ দলের প্রতীকের পক্ষে গান-কবিতা কিংবা স্লোগান তৈরি করে নানা ধরনের প্রচারণাও চালিয়ে থাকে।

বর্তমানে নিবন্ধন স্থগিত থাকা আওয়ামী লীগসহ নির্বাচন কমিশনের নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলের সংখ্যা ৫২টি। অর্ধশতাধিক রাজনৈতিক দল নিবন্ধিত থাকলেও হাতে গোনা কয়েকটি দলের নির্বাচনী প্রতীক বাদে অনেক দলের প্রতীক সাধারণ মানুষের কাছে খুব একটা পরিচিত নয়।

বিশ্লেষকরা বলছেন, বাংলাদেশের বড় বড় রাজনৈতিক দল যে প্রতীকে নির্বাচন করে আসছে, তার অনেকগুলোই শুরুতে নিজ দলের প্রতীক ছিল না।

ধানের শীষ যেভাবে বিএনপির হলো

১৯৭৮ সালের ১ সেপ্টেম্বর তৎকালীন রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান বিভিন্ন রাজনৈতিক পথ-মতের অনুসারীদের এক প্লাটফর্মে এনে প্রতিষ্ঠা করেন বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বা বিএনপি।

রাজনৈতিক দল হিসেবে বিএনপি প্রতিষ্ঠার পর প্রথম ধানের শীষ প্রতীকে নির্বাচন করে ১৯৭৯ সালে।

বিশ্লেষকরা বলছেন, এই ধানের শীষ বিএনপির আগেও ব্যবহার হয়েছিল নির্বাচনে। বাংলাদেশের স্বাধীনতার আগে ১৯৭০ সালের নির্বাচনে ধানের শীষ মার্কায় নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিলেন মাওলানা আব্দুল হামিদ খান ভাসানীর নেতৃত্বে ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি বা ন্যাপ।

ধানের শীষকে প্রতীক হিসেবে বেছে নিয়ে যুক্তফ্রন্ট থেকে বের হয়ে গিয়েছিলেন মাওলানা ভাসানীর নেতৃত্বাধীন ন্যাপ।

পরবর্তীতে মওলানা ভাসানীর নেতৃত্বে ন্যাপের বড় একটি অংশের যোগ দেয়ার মধ্য দিয়ে ১৯৭৮ সালে বিএনপির জন্ম হয়। এবং এই অংশটির নেতৃত্বে ছিলেন মশিউর রহমান, তিনি যাদু মিয়া নামে পরিচিত।

বিশ্লেষক মহিউদ্দিন আহমদ বিবিসি বাংলাকে বলেন, ‘ভাসানী ন্যাপের বড় অংশ যখন মশিউর রহমানের নেতৃত্বে বিএনপিতে মিশে যায়, তখন বিএনপি ধানের শীষ প্রতীক নেয়। যেহেতু যাদু মিয়ার অংশই বড় ছিল, তাই তারাই ধানের শীষ প্রতীকসহ বিএনপিতে একীভূত হয়। তখন থেকেই বিএনপির প্রতীক হয় ধানের শীষ।’

এরপর থেকে বিভিন্ন সংসদ নির্বাচনে দলীয় প্রতীক হিসেবে ধানের শীষে নির্বাচনে অংশ নিয়ে আসছে বিএনপি।

নির্বাচন কমিশনের সাবেক কর্মকর্তারা বলছেন, শুধু বিএনপি নয় নব্বই পরবর্তী নির্বাচনগুলোয় আগে থেকেই যেসব দল যে যে প্রতীকে নির্বাচন করতো- পরবর্তীতে তারা সেই প্রতীক ব্যবহার করে আসছে।

সাবেক নির্বাচন কর্মকর্তা জেসমিন টুলী বলেন, ‘২০০১ সালের আগে একটা নিয়ম ছিল নির্বাচনের আগে প্রতীক বরাদ্দের দিনে ইসি সব রাজনৈতিক দলের সাথে বসে তারপর প্রতীক বরাদ্দ দিতো। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে দলগুলো আগে যে প্রতীকে নির্বাচন করতো সেই প্রতীকই তাদের বরাদ্দ দেয়া হতো।’

তিনি জানান, পরবর্তীতে ২০০৮ সালের নির্বাচনের আগে ড. এটিএম শামছুল হুদার নেতৃত্বাধীন নির্বাচন কমিশন রাজনৈতিক দলগুলোর নিবন্ধন প্রক্রিয়া চালু করে। তখন বিএনপিকে ধানের শীষ প্রতীক দেয়া হয়।

পরবর্তীতে শুধু জাতীয় সংসদ নির্বাচন নয়, কোনো কোনো স্থানীয় সংসদ নির্বাচনেও বিএনপি প্রার্থীরা ধানের শীষ মার্কায় নির্বাচনে অংশ নিয়েছিল।

নৌকাও ছিল না আওয়ামী লীগের

বাংলাদেশের নির্বাচনের ইতিহাসে নৌকা মার্কা অনেকটাই ঐতিহাসিক। শুধু বাংলাদেশে নয়, স্বাধীনতা পূর্ববর্তী ১৯৭০ সালের নির্বাচনেও নৌকা মার্কায় ভোটে অংশ নিয়েছিল আওয়ামী লীগ।

গবেষক ও বিশ্লেষকরা বলছেন, ১৯৫৪ সালের পূর্ব পাকিস্তান পরিষদ নির্বাচনে প্রধান দু’টি প্রতিদ্বন্দ্বি দল ছিল যুক্তফ্রন্ট এবং মুসলিম লীগ। সে সময় মুসলিম লীগ ‘হারিকেন’ এবং যুক্তফ্রন্ট ‘নৌকা’ প্রতীক নিয়ে নির্বাচনে অংশ নিতো।

যুক্তফ্রন্টের সবচেয়ে বড় দল আওয়ামী মুসলিম লীগ হওয়ায় যুক্তফ্রন্ট ভেঙে যাওয়ার পর নৌকা প্রতীকটিও চলে আসে আওয়ামী লীগের কাছে। ১৯৫৭ সালে মুসলিম শব্দটি বাদ দিয়ে জন্ম নেয় আওয়ামী লীগ।

তবে নৌকা প্রতীক পেলেও নির্বাচনে অংশ নিতে আওয়ামী লীগকে অপেক্ষা করতে হয় ১৯৭০ সাল পর্যন্ত। পাকিস্তান আমলে ১৯৭০ সালে অনুষ্ঠিত সাধারণ পরিষদ নির্বাচনে শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ নৌকা প্রতীক নিয়ে অংশগ্রহণ করে ১৬০টি আসনে জয়ী হয়।

বিশ্লেষক মহিউদ্দিন আহমদ বিবিসি বাংলাকে বলেন, ‘১৯৭০ সালেই প্রথম নৌকা প্রতীকে নির্বাচনে অংশ নেয় আওয়ামী লীগ। তখন আওয়ামী লীগের শরীকরাও আর এই নৌকা প্রতীক দাবি না করায় পরবর্তীতে নৌকাই হয়ে যায় আওয়ামী লীগের নির্বাচনী প্রতীক।’

নৌকাকে কেন আওয়ামী লীগ নির্বাচনের প্রতীক হিসেবে বেছে নিয়েছিল? এমন প্রশ্নে মহিউদ্দিন আহমদ বলছিলেন, ‘নদী মাতৃক বাংলাদেশে তখন নৌকা ছিল গণ-মানুষের কাছে খুব পরিচিত প্রতীক। যে কারণে নৌকা মার্কায় বিশেষ ঝোঁকও ছিল আওয়ামী লীগের।’

পরে বিভিন্ন সংসদ নির্বাচন এবং স্থানীয় সরকারের বিভিন্ন নির্বাচনেও আওয়ামী লীগ এই নৌকা মার্কায় ভোটে অংশ নেয়।

২০২৪ সালে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর অন্তর্বর্তী সরকার আওয়ামী লীগের কার্যক্রমে নিষেধাজ্ঞা দেয়।

এরপরই নির্বাচন কমিশন আওয়ামী লীগের নিবন্ধন ও দলীয় প্রতীক নৌকা প্রতীকও স্থগিত করে। যে কারণে বর্তমানে নির্বাচন কমিশনে যে প্রতীক তালিকা রয়েছে, সেখানেও স্থগিত রাখা হয়েছে নৌকা প্রতীক।

লাঙ্গলের মালিকানারও হাত বদল

নৌকা কিংবা ধানের শীষের মতোই বাংলাদেশের নির্বাচনের ইতিহাসে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রতীক লাঙ্গল। বর্তমানে জাতীয় পার্টির দলীয় প্রতীক হিসেবে ব্যবহার হয়ে আসছে লাঙ্গল মার্কা।

লাঙ্গল মার্কাটি বর্তমানে জাতীয় পার্টির দলীয় প্রতীক হিসেবে থাকলেও এটি প্রথম দলীয় প্রতীক হিসেবে ব্যবহার হয় অবিভক্ত ভারতবর্ষে।

তখন শেরেবাংলা এ কে ফজলুল হকের নেতৃত্বে অবিভক্ত ভারতের কৃষক প্রজা পার্টির প্রতীক ছিল লাঙ্গল। সেখান থেকে লাঙ্গলের মালিকানা যায় আতাউর রহমান খানের জাতীয় লীগের কাছে।

গবেষক ও বিশ্লেষকরা বলছেন, পাকিস্তান আমলে ১৯৭০ সালে জাতীয় নির্বাচনে আতাউর রহমানের দল লাঙ্গল প্রতীকে অংশ নিয়েছিল। পরবর্তীতে ১৯৭৩ সালে স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম নির্বাচনে আতাউর রহমান এই লাঙ্গল মার্কাতেই নির্বাচনে অংশ নিয়েছিলেন।

১৯৮৪ সালে হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের শাসনের রাষ্ট্রপতি শাসিত সরকারে আতাউর রহমান খান প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নিযুক্ত হন। পাশাপাশি বিলুপ্তি ঘটে বাংলাদেশ জাতীয় লীগের। পরবর্তী সময়ে লাঙ্গল প্রতীকটি গ্রহণ করেন হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ।

গবেষক মহিউদ্দিন আহমদ বিবিসি বাংলাকে বলেন, ‘আতাউর রহমান খান এক সময়ে এরশাদের সাথে জোটে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী হন। পরে সেটা জাতীয় পার্টির প্রতীকও হয়ে গিয়েছিল।’

নব্বই পরবর্তী বাংলাদেশে আটটি জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। সে সব নির্বাচনে জাতীয় পার্টি লাঙ্গল প্রতীকেই ভোটে অংশ নেয়। কিন্তু এসব নির্বাচনে কখনো ক্ষমতায় যেতে পারেনি এরশাদের হাতে গড়া এ দলটি।

বিশ্লেষকরা বলছেন, ক্ষমতা ছাড়ার পর গত প্রায় চার দশকে বেশ কয়েক দফায় জাতীয় পার্টি ভাঙনের মুখে পড়লেও দলীয় প্রতীক কখনো হাতছাড়া করেনি এরশাদের অংশ।

শেখ হাসিনা সরকার পতনের পর জাতীয় পার্টি আরেক দফায় ভেঙেছে। আনিসুল ইসলাম মাহমুদের নেতৃত্বাধীন অংশ কাউন্সিল করে কমিটি গঠন করে নির্বাচন কমিশনের কাছে দলীয় প্রতীক হিসেবে লাঙ্গল চেয়েছে।

যদিও নির্বাচন কমিশনের হালনাগাদ তালিকায় এখনো পর্যন্ত ‘লাঙ্গল’ প্রতীক রয়েছে জাতীয় পার্টির জিএম কাদেরের নেতৃত্বাধীন অংশের কাছে।

দাঁড়িপাল্লার ‘আসা-যাওয়া’

স্বাধীনতা পূর্ববর্তী ১৯৭০ সালের জাতীয় নির্বাচনে নৌকা কিংবা লাঙ্গল প্রতীকের সাথে জামায়াত ইসলামীও অংশ নিয়েছিল দাঁড়িপাল্লা প্রতীকে।

স্বাধীনতা পরবর্তী বাংলাদেশে জামায়াত দলগতভাবে নির্বাচনে অংশ নেয় ১৯৮৬ সালে। ওই বছর জাতীয় নির্বাচনে ‘দাঁড়িপাল্লা’ বরাদ্দের জন্য আবেদন করে নির্বাচন কমিশনে। পরে নির্বাচনি প্রতীক হিসেবে ‘দাঁড়িপাল্লা’ পায় দলটি।

এরপরে দলীয় প্রতীক দাঁড়িপাল্লা নিয়ে আরো পাঁচটি সংসদীয় নির্বাচনে অংশ নেয় জামায়াত। ২০০৮ সালে নির্বাচন কমিশন যখন রাজনৈতিক দল নিবন্ধন চালু করে তখনো চাহিদা অনুযায়ী দাঁড়িপাল্লা প্রতীক দেয়া হয় জামায়াত ইসলামীকে।

হাইকোর্টে এক রিটের আদেশের ২০১৩ সালে রাজনৈতিক দল হিসেবে জামায়াতের নিবন্ধন অবৈধ ঘোষণা করা হয়। পরে তাদের নিবন্ধন বাতিল করে নির্বাচন কমিশন।

রাজনৈতিক বিশ্লেষক মহিউদ্দিন আহমদ বিবিসি বাংলাকে বলেন, ‘জামায়াতের প্রতীক নিয়ে ১৯৮৬ সালেও বিতর্ক তৈরি হয়েছিল। তখন তারা বলেছে, এটা তাদের অনেক পুরানো প্রতীক। এই প্রতীক নিয়েই ১৯৭০ সালেও ভোট করেছিল। ইসি তখন এই প্রতীক বহাল রেখেছিল।’

২০১৬ সালে রাজনৈতিক দল বা প্রার্থীকে প্রতীক হিসেবে দাঁড়িপাল্লা বরাদ্দ না দিতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ার জন্য নির্বাচন কমিশনকে (ইসি) চিঠি দেন সুপ্রিম কোর্ট প্রশাসন।

তখন উচ্চ আদালতের চিঠির পরিপ্রেক্ষিতে ২০১৭ সালের ৯ মার্চ ‘দাঁড়িপাল্লা’ প্রতীক বাদ দিয়ে নির্বাচন পরিচালনা বিধিমালা, ২০০৮ সংশোধন করে গেজেট প্রকাশ করে ইসি। ফলে নির্বাচনে দল বা প্রার্থীর

প্রতীক হিসেবে দাঁড়িপাল্লা প্রতীক বাদ হয়ে যায়।

যে কারণে ২০১৮ সালে জামায়াতকে বিএনপির সাথে জোটবদ্ধ নির্বাচনে অংশ নিতে হয় ধানের শীষ প্রতীকে।

গত বছরের জুলাই-আগস্টের ছাত্র-জনতার আন্দোলনের সময় জামায়াতকে নিষিদ্ধ দল হিসেবে ঘোষণা করা হয়। পরে শেখ হাসিনা সরকার পতনের পর উঠে যায় সেই নিষেধাজ্ঞা।

চলতি বছরের জুনে আদালতের নির্দেশে নিবন্ধনসহ আবারো দাঁড়িপাল্লা প্রতীক ফিরে পায় জামায়াত। আগামী নির্বাচনকে সামনে রেখে এই প্রতীকের পক্ষে এরই মধ্যে নির্বাচনী প্রচারণা শুরু করেছে দলটি।

প্রতীক ‘বিতর্কে’ নির্বাচন কমিশন

বাংলাদেশে বর্তমান নির্বাচন কমিশনে নিবন্ধিত রাজনৈতিক দল রয়েছে ৫৪টি। গত সেপ্টেম্বরে গণ-অভ্যুত্থানের নেতৃত্ব দেয়া শিক্ষার্থীদের দল জাতীয় নাগরিক পার্টি বা এনসিপি এবং বাংলাদেশ জাতীয় লীগ নামে দু’টি দলকে নিবন্ধন দেয় নির্বাচন কমিশন।

ওই দু’টি দলকে নিবন্ধন দেয়ার আগে গত ২৪ সেপ্টেম্বর ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে রাজনৈতিক দল ও স্বতন্ত্র প্রার্থীদের জন্য ১১৫টি প্রতীকের তালিকা প্রকাশ করে ইসি।

যেখানে নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলের ৬৯টি প্রতীকের পাশাপাশি নতুন করে যুক্ত করা হয় ৪৬টি প্রতীক।

নিবন্ধনের আবেদনের পর ছাত্রদের রাজনৈতিক দল এনসিপির পক্ষ থেকে বেশ কয়েক দফায় শাপলা

প্রতীক হিসেবে দাঁড়িপাল্লা প্রতীক বাদ হয়ে যায়।

যে কারণে ২০১৮ সালে জামায়াতকে বিএনপির সাথে জোটবদ্ধ নির্বাচনে অংশ নিতে হয় ধানের শীষ প্রতীকে।

গত বছরের জুলাই-আগস্টের ছাত্র-জনতার আন্দোলনের সময় জামায়াতকে নিষিদ্ধ দল হিসেবে ঘোষণা করা হয়। পরে শেখ হাসিনা সরকার পতনের পর উঠে যায় সেই নিষেধাজ্ঞা।

চলতি বছরের জুনে আদালতের নির্দেশে নিবন্ধনসহ আবারো দাঁড়িপাল্লা প্রতীক ফিরে পায় জামায়াত। আগামী নির্বাচনকে সামনে রেখে এই প্রতীকের পক্ষে এরই মধ্যে নির্বাচনী প্রচারণা শুরু করেছে দলটি।

প্রতীক ‘বিতর্কে’ নির্বাচন কমিশন

বাংলাদেশে বর্তমান নির্বাচন কমিশনে নিবন্ধিত রাজনৈতিক দল রয়েছে ৫৪টি। গত সেপ্টেম্বরে গণ-অভ্যুত্থানের নেতৃত্ব দেয়া শিক্ষার্থীদের দল জাতীয় নাগরিক পার্টি বা এনসিপি এবং বাংলাদেশ জাতীয় লীগ নামে দু’টি দলকে নিবন্ধন দেয় নির্বাচন কমিশন।

ওই দু’টি দলকে নিবন্ধন দেয়ার আগে গত ২৪ সেপ্টেম্বর ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে রাজনৈতিক দল ও স্বতন্ত্র প্রার্থীদের জন্য ১১৫টি প্রতীকের তালিকা প্রকাশ করে ইসি।

যেখানে নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলের ৬৯টি প্রতীকের পাশাপাশি নতুন করে যুক্ত করা হয় ৪৬টি প্রতীক।

নিবন্ধনের আবেদনের পর ছাত্রদের রাজনৈতিক দল এনসিপির পক্ষ থেকে বেশ কয়েক দফায় শাপলা

উদাহরণ টেনে বিবিসি বাংলাকে মিজ টুলী বলেন, ‘একবার একটি দল প্রতীক হিসেবে জাহাজ মার্কা চাইলো। সাদাকালো ব্যালটে দেখতে প্রায় নৌকার মতো হওয়ায় তখন এ নিয়ে ইসিতে আপত্তি জানিয়েছিল আওয়ামী লীগ।’

একইভাবে বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে ২০১৩ সালে নিবন্ধন পায় বিএনএফ নামে একটি রাজনৈতিক দল। তখন দলটিকে গমের শীষ প্রতীক দেয়ার কথাও উঠেছিল। সেই খবর পেয়ে তখন ইসিতে আপত্তি জানিয়েছিল বিএনপির একটি প্রতিনিধি দল।

তখন নির্বাচন কমিশন বিএনএফকে আর গমের শীষ প্রতীক দেয়নি। এর পরিবর্তে দলটিকে দেয়া হয় টেলিভিশন।

বর্তমানে নির্বাচন কমিশন যে নতুন প্রতীক তালিকা করেছে সেখানে কম্পিউটারও প্রতীক হিসেবে রয়েছে।

বিশ্লেষকরা বলছেন, সাদাকালো একই ব্যালটে যদি কম্পিউটার আর টেলিভিশন থাকে তখন অনেক ভোটার বুঝতেই পারবে না কোনটি কী প্রতীক!

জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ব্যালট সাদাকালো হয়ে থাকে। সেই ব্যালটে শাপলা, গোলাপ কিংবা অন্য ফুল দিলেও দেখতে প্রায় একই রকম হয়। আবার নির্বাচনী মার্কা হিসেবে প্রতীক তালিকায় ফুলকপিও রয়েছে। যেটিও দেখতে প্রায় একই রকম।

বিশ্লেষক মহিউদ্দিন আহমদ বলছিলেন, ‘নির্বাচনের ইতিহাস বলছে, জনজীবনের সাথে পরিচিত প্রতীকে ভোটারদের আগ্রহ বেশি ছিল সব সময়। কখনো প্রতীক যদি উদ্ভট একই সাদৃশ্যের হয়, সেটি নিয়ে যেমন হাস্যরস হয় কিংবা ধোঁয়াশাও তৈরি হয়। সূত্র : বিবিসি


এই ক্যাটাগরির আরও সংবাদ
এক ক্লিকে বিভাগের খবর