দেশের মানুষের যাতে কষ্ট না হয়, তাদের চাহিদা যাতে পূরণ হয়, সেসব বিষয় বিবেচনায় নিয়ে বাজেট প্রণয়ন করা হয়েছে, জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে রাখাই চ্যালেঞ্জ।
৭ জুন বিকেলে রাজধানীর তেজগাঁওয়ে ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে ছয় দফা দিবস উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভায় তিনি এ কথা বলেন তিনি।
সরকারপ্রধান বলেন, ‘সবথেকে বড় চ্যালেঞ্জ হচ্ছে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে রাখা, বিশেষ করে খাদ্যমূল্য। উৎপাদন এবং সরবরাহ বৃদ্ধি করতে হবে। বৃষ্টির কারণে যেমন আলুর বীজ নষ্ট হয়ে গেছে, তো এরকম অনেক কিছু আছে। আমরা এখনও উৎপাদনমুখী হলে খাদ্যের অভাব কোনোদিন হবে না।’
‘বিশ্ব পরিস্থিতি মাথায় রেখে আমাদের পরিকল্পনা নিয়ে চলতে হবে। আমাদের দেশে যারা হচ্ছে… কিছু ভালো লাগে না। তাদের ভালো না লাগাই থাক, কান দেওয়ার দরকার নেই।’
‘আমরা এগিয়ে যাচ্ছিলাম, কোভিড-১৯ অতিমারি দেখা দিয়েছে, এই অতিমারির ফলে সারা বিশ্বে অর্থনৈতিক মন্দা হয়েছে, আমরাও সেই মন্দায় পড়ে গেলাম। সারা বিশ্বে প্রতিটি জিনিসের দাম বেড়ে গেল। এরপর আসলো ইউক্রেন-রাশিয়ার যুদ্ধ, এরপর স্যাংশন পাল্টা স্যাংশন, স্যাংশনের ফলে প্রত্যেকটা জিনিসের দাম বৃদ্ধি পেয়েছে’, বলেন তিনি।
কোভিড মহামারিকালে মানুষের জীবন বাঁচাতে টিকাসহ আনুষাঙ্গিক খরচে পানির মতো টাকা দিতে হয়েছে, জানিয়ে সরকারপ্রধান বলেন, ‘আমাদের মানুষকে খাওয়াতে হবে আগে। আমাদের রিজার্ভ কত আছে না আছে, সেটার চেয়ে বেশি দরকার আমার দেশের মানুষের চাহিদাটা পূরণ করা। সেদিকে লক্ষ্য রেখে আমরা পানির মতো টাকা খরচ করেছি।
শেখ হাসিনা বলেন, ‘বাংলাদেশ একমাত্র দেশ, যেটা কোনো উন্নত দেশ করে নাই যে, বিনা পয়সায় কোভিড-১৯ এর ভ্যাকসিন দিয়েছি। বিনা পয়সায় টেস্ট করিয়েছি। সেটা করেছি কেন? মানুষ বাঁচাতে। চিকিৎসা বিনা পয়সায়, যে ডাক্তার চিকিৎসা করেছে, তাদের প্রতিদিন আলাদা ভাতা দিতে হতো, তারা যে চিকিৎসা দিচ্ছে, এভাবে পানির মত টাকা খরচ হয়েছে।’
মানুষের চাহিদা পূরণের ভাবনা থেকেই এই বাজেট দেওয়া হয়েছে, জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, ‘অনেকে বসে বসে হিসাব কষে, আগে এত পার্সেন্ট বেড়েছে, এবার কম পার্সেন্ট বাড়ল কেন? এখন সীমিতভাবে খুব সংরক্ষিতভাবেই আমরা এগোতে চাই। আমাদের দেশের মানুষের কষ্ট যেন না হয়। মানুষের যে চাহিদাটা, সেটা যেন পূরণ করতে পারি, সেদিকে লক্ষ রেখেই আমরা বাজেট করেছি।’
তিনি বলেন, ‘পারিবারিক কার্ড আমরা দিচ্ছি, কারণ এখন মূল্যস্ফীতি বেশি। সবথেকে অবাক কাণ্ড—আমাদের উৎপাদন বেড়েছে, চাল উৎপাদনই আমরা চার গুণ বাড়িয়েছি। প্রত্যেকটা জিনিস আমরা উৎপাদন বাড়িয়েছি। মানুষের আর্থিক সচ্ছলতা বেড়েছে, মানুষের খাদ্য গ্রহণের পরিমাণও বেড়েছে। এখন আর দিনের পর দিন না খেয়ে থাকতে হয় না। কমপক্ষে দুই বেলা খাবার তো পাচ্ছে মানুষ। সেখানে গ্রহণটাও বেড়েছে, চাহিদাটাও বেড়েছে। আমরা সাথে সাথে উৎপাদনও বাড়িয়েছি।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘যেহেতু মূল্যস্ফীতি বেড়েছে, নিম্ন আয়ের মানুষ যারা, তাদের জন্য আমরা পারিবারিক কার্ড করে দিয়েছি। যারা একেবারে হতদরিদ্র তাদের তো একেবারে বিনা পয়সায় খাবার দিচ্ছি। সামাজিক নিরাপত্তা তো বিনা পয়সায় দিয়ে যাচ্ছি।’