বুধবার, ০৫ নভেম্বর ২০২৫, ০৮:৫১ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম :
শিরোনাম :
নির্বাচন সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষভাবে আয়োজনে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা এনসিপির নির্বাচন পরিচালনা কমিটি গঠন মনোনয়ন কেন্দ্র করে সহিংসতা,চট্টগ্রামের বিএনপির চার নেতা বহিষ্কার দেশে ফিরলেন জামায়াত আমির ৬৩ আসনের বেশিরভাগ শরিকদের জন্য রেখেছে বিএনপি ভোটার প্রতি সর্বোচ্চ ১০ টাকা খরচ করতে পারবেন সংসদ সদস্য প্রার্থীরা নির্বাচনী প্রশিক্ষণ সম্পন্ন করেছেন ৪৮ হাজার পুলিশ সদস্য : পুলিশ হেডকোয়ার্টার্স এবারও পেলেন না বিএনপির মনোনয়ন, যা বললেন সংগীতশিল্পী মনির খান জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আ. লীগের সবাই দেশপ্রেমিক দলকে ভোট দেবে: মির্জা আব্বাস ট্রাকচাপায় অটোরিকশার ৬ যাত্রী নিহত

পরলোকে জাতীয় পতাকার নকশাকার শিব নারায়ন দাশ

সাইফুল ইসলাম মেট্রোটাইমসটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট : শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল, ২০২৪, ৪:২৮ অপরাহ্ন

বাংলাদেশের জাতীয় পতাকার অন্যতম নকশাকার, বীর মুক্তিযোদ্ধা শিব নারায়ন দাশ পরলোক গমন করেছেন।

আজ শুক্রবার সকাল ৯ টা ২৫ মিনিটে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) কেবিন ব্লকের আইসিইউতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শেষ নি:শ্বাস ত্যাগ করেন তিনি। শ্বাসকষ্ট নিয়ে গত ১ এপ্রিল রাজধানীর শমরিতা হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন শিব নারায়ণ দাশ। সেখান থেকে ডাক্তারের পরামর্শে তাকে বিএসএমএমইউ-তে স্থানান্তর করা হয়।
শিবনারায়ন দাশের ছেলে অর্ণব আদিত্য দাশ জানান, তার বাবার মরদেহ বারডেমের মরচুয়ারিতে রাখা হবে। তার দেহ এখানে দান করা হবে এবং কর্নিয়া দান করা হবে সন্ধানীতে।শিব নারায়ন দাশের বয়স হয়েছিল ৭৮ বছর। তিনি এক ছেলে ও স্ত্রীসহ অসংখ্য আত্মীয়-স্বজন গুণগ্রাহী ও সহকর্মী রেখে গেছেন।

শিবনারায়ণ দাসের জন্ম কুমিল্লায়। তার পিতা সতীশচন্দ্র দাশ। তিনি কুমিল্লায় আয়ুর্বেদ চিকিৎসা করতেন। ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে পাক হানাদাররা তাকে ধরে নিয়ে হত্যা করে। শিবনারায়ণ দাশের স্ত্রীর নাম গীতশ্রী চৌধুরী এবং এক সন্তান অর্ণব আদিত্য দাশ।

ভাষা সৈনিক ধীরেন্দ্রনাথ দত্তের হাত ধরে রাজনীতিতে আসেন শিব নারায়ণ দাস। ১৯৬২ সালের শিক্ষা আন্দোলন অংশগ্রহণ করে কারাবরণ করেন। তিনি ছাত্রলীগের সক্রিয় কর্মী ও নেতা ছিলেন।

১৯৭০ সালের ৭ জুন ঢাকার পল্টন ময়দানে অনুষ্ঠিত ছাত্রদের এক সামরিক কুচকাওয়াজে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের অংশগ্রহণের কথা ছিল। এই লক্ষ্যে ছাত্রদের নিয়ে একটি জয়বাংলা বাহিনী, মতান্তরে ‘ফেব্রুয়ারি ১৫ বাহিনী’ গঠন করা হয়। ছাত্র নেতারা এই বাহিনীর একটি পতাকা তৈরির সিদ্ধান্ত নেয়।

এই লক্ষ্যে ১৯৭০ সালের ৬ জুন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের তৎকালীন ইকবাল হলের (বর্তমান সার্জেন্ট জহুরুল হক হল) ১০৮ নং কক্ষে ছাত্রলীগ নেতা আ স ম আবদুর রব, শাহজাহান সিরাজ, কাজী আরেফ আহমদ, মার্শাল মনিরুল ইসলাম পতাকার পরিকল্পনা নিয়ে বৈঠকে বসেন। এ বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন ছাত্রলীগ নেতা স্বপন কুমার চৌধুরী, জগন্নাথ কলেজের ছাত্রলীগ নেতা নজরুল ইসলাম, কুমিল্লা জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ও কেন্দ্রীয় ছাত্রনেতা শিবনারায়ন দাশ, প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগ  সাধারণ সম্পাদক হাসানুল হক ইনু ও ছাত্রনেতা ইউসুফ সালাউদ্দিন।

সভায় কাজী আরেফের প্রাথমিক প্রস্তাবনার ওপর ভিত্তি করে সবার আলোচনার শেষে সবুজ জমিনের ওপর লাল সূর্যের মাঝে হলুদ রঙের বাংলার মানচিত্র খঁচিত পতাকা তৈরির সিদ্ধান্ত হয়। কামরুল আলম খান (খসরু) তখন ঢাকা নিউ মার্কেটের এক বিহারী দর্জির দোকান থেকে বড় এক টুকরো সবুজ কাপড়ের মাঝে লাল একটি বৃত্ত সেলাই করে আনলেন; এরপর প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের কায়েদে আজম হল (বর্তমানে তিতুমীর হল)-এর ৩১২ নং কক্ষের এনামুল হকের কাছ থেকে অ্যাটলাস নিয়ে ট্রেসিং পেপারে আঁকা হলো পূর্ব পাকিস্তানের মানচিত্র। শিবনারায়ণ দাস পরিশেষে তার নিপুণ হাতে মানচিত্রটি আঁকলেন লাল বৃত্তের মাঝে। এভাবেই রচিত হলো ‘ফেব্রুয়ারি ১৫ বাহিনী’র পতাকা, যা কিছুদিন পর স্বীকৃত হয় বাংলাদেশের প্রথম পতাকা হিসেবে।

বাংলাদেশের মানচিত্র সম্বলিত এই পতাকা ধরেই হয়েছিল স্বাধীনতা সংগ্রাম। ১৯৭১ সালের ২ মার্চ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কলা ভবনের সামনে প্রথম বাংলাদেশের এই পতাকা ওড়ানো হয়েছিল।লাল-সবুজের ভেতরে হলুদ রঙে বাংলাদেশের মানচিত্র সম্বলিত ওই পতাকার নকশা যারা করেছিলেন, তাদের একজন সে সময়ের ছাত্রলীগ নেতা শিব নারায়ণ দাশ।
১৯৭০ সালের ৬ জুন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের তৎকালীন ইকবাল হলের (বর্তমান সার্জেন্ট জহুরুল হক হল) ১১৮ নম্বর কক্ষে বসে ছাত্রলীগের একদল নেতাকর্মী ওই পতাকার নকশা তৈরি করেছিলেন ‘জয়বাংলা বাহিনীর’ জন্য।


এই ক্যাটাগরির আরও সংবাদ
এক ক্লিকে বিভাগের খবর